২৫ এপ্রিল, ২০২৪, বৃহস্পতিবার

ফরিদপুরে পঠন কথন বাচনে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ উদযাপন

Advertisement

ফরিদপুরে পঠন কথন বাচনে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ উদযাপন হয়েছে। আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

‘তাকে চেনা মানের এক বিরাট জয়’- এ আহ্বানকে সামনে রেখে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চের উদ্যোগে। এ আয়োজনে শব্দ পংক্তি ধরে বিদ্রোহী কবিতার ‘পঠন কথন ও বাচনে সূত্রধর ছিলেন বিশষ্ট নাট্য গবেষক বিপ্লব বালা।

পিন পতন নিস্তব্ধতায় বিদ্রোহী কবিতার প্রতিটি লাইন ধরে ধরে পড়ে প্রতিটি শব্দের মানে পৌরাণিক বিভিন্ন উপমার বিষয়াবলী সম্পর্কে অবগত হন শ্রেতারা। বিপ্লব বালা বলেন, এ কবিতাটি বিশ্ব সাহিত্যের এক অমর সৃষ্টি। পুরাণকে কবিতার উপজীব্য করে নিজের ভিতরের শক্তিকে জাগিয়ে তোলার প্রেরণা এ কবিতার মধ্যে আমরা পাই।

তিনি বলেন, এ কবিতাটি আমরা গলা মোটা করে পড়ি কিন্তু ভালোমত অর্থ বুঝি না। কবিতার মধ্যে ঢুকে কবিতাকে বোঝা হয়না, যা হয় ভাসা ভাসা। তিনি বলেন, মানুষের জন্য যা কিছু ভালো তা কোন বিশেষ কোন ধর্ম, দেশ বা অঞ্চলের জন্য সত্য নয়, সব মানুষের জন্য সত্য। এ সত্য অনেক সময় আমরা বিস্মৃত হই কিংবা বুঝেও না বোঝার চেষ্টা করি।

অনুষ্ঠানে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা রচনা ও প্রকাশের সময়কালের (১৯২১-১৯২২) রাজনৈতিক ও আর্থ সামজিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বক্তব্য দেন দৈনিক সমকাল পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান।

আবু সাঈদ খান বলেন, ওই সময়কালে ভারতীয় উপমহাদেশে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের তোষাণনীতিমূলক রাজনীতি শুরু করে। এ মানসিকতার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে তরুণ সমাজ অবস্থান নেয়। এ তরুণ সমাজের অধিকাংশ  ছিল হিন্দু। সমাজ সচেতন কবি নজরুল এ আন্দোলনে মুসলিম তরুণদের অংশ নেওয়ানোর উদ্যোগ নেন।

তিনি বলেন, নজরুল স্বাধীনতার প্রশ্নে ছিলেন আপোষষহীন কবি। তিনি সমাজে হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দের প্রশ্নে, শোষণ অন্যায় অত্যাচার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সমাজে সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। এজন্যই নজরুল বলতে পেরেছিলেন, ‘মহা-বিদ্রহী রণ ক্লান্ত/ আমি সেই দিন হব শান্ত/ যবে উৎপীরতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাশে ধ্বনিবে না-/ অত্যাচারির খরড় কৃপাণ ভীম রণিবে‚মে রণিবে না-।’

বিদ্রোহী কবিতা নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন ফরিদপুর সরকারি ইয়াছিন কলেজের অধ্যক্ষ শিলা রানী মন্ডল, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের তালুকদার আনিসুল ইসলাম। আলোচনায় অংশ নেন ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক শামীমা বেগম, লেখক শ্যামল বিশ্বাস প্রমুখ।

বিদ্রোহী কবিতার কিছু অংশ পাঠ করে শোনান ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাক্ষ আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো। সভাপতির বক্তব্যে ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চের সভাপতি আওলাদ হোসেন বাবর বলেন, নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা, সব কাল, সব দেশসহ সমগ্র মানব জাতির জন্য সত্য ও অনুকরণীয়। এ কবিতা সকল অন্যায়, সকল অনাচার ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের শক্তি জোগায়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চেন সাধারণ সম্পাদক পান্না বালা।

অনুষ্ঠানস্থলে বিভিন্ন দেশ বরেণ্য শিল্পীর আঁকা কবি নজরুলের প্রতিকৃতির প্রদর্শনীর আয়োজনকরা হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement