১৯ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

নতুন সংযোজন নিয়ে এলো জিপিটি-৪

Advertisement

বর্তমানে চ্যাটজিপিটি চলছে জিপিটি-৩ ও জিপিটি-৩.৫ সংস্করণের প্রযুক্তি ব্যবহার করে। জিপিটি-৪ তৈরিতে যে ডাটাসেট ব্যবহৃত হয়েছে, তার পরিব্যাপ্তি ১৭০ ট্রিলিয়নটি প্যারামিটার বা তথ্যের ধরন। এত দিন জিপিটি-৩ মাত্র ১৭৫ বিলিয়ন প্যারামিটার দিয়েই কাজ চালিছে এসেছে। এই বিশাল পরিমাণ তথ্যের ধরন নিয়ে কাজ করায় জিপিটি-৪ ১০০ গুণ পর্যন্ত জিপিটি-৩-এর চেয়ে নিখুঁতভাবে ভাষা বুঝতে ও বলতে পারে। এত দিন চ্যাটজিপিটি চট করে চলিত ভাষা বুঝতে পারত না, বিশেষ করে বাগধারার ব্যবহার বুঝতে তার বেশ সমস্যা হতো। সেই সীমাবদ্ধতা অনেকাংশে কমিয়ে আনা হয়েছে। এতে ব্যবহারকারী কী চাইছে, সেটা চ্যাটজিপিটি আরো ভালোভাবে বুঝতে তো পারবেই, তার তৈরি ফলাফলেও ভুলের পরিমাণ কমবে অন্তত ২০ গুণ। ফলগুলো আগের চেয়ে হবে আরো সহজবোধ্য ও স্বচ্ছ, যেমন—এত দিন যদি চ্যাটজিপিটি রচনা লিখত সেটা ছিল ‘বি’ গ্রেডের, এখন একই বিষয়ে রচনা লিখলে সেটা হবে ‘এ’ প্লাস পাওয়ার যোগ্য।

দিতে পারবে ছবির বিশ্লেষণ

লিখিত প্রম্পটের পাশাপাশি এখন থেকে ছবিও বিশ্লেষণ করে সেটাকে ইনপুট হিসেবে নিতে পারবে চ্যাটজিপিটি। এর অর্থ বইয়ের পাতা বা হোয়াইট বোর্ডের ছবি তুলে দিলে সেখানে থাকা সমস্যা বা প্রশ্নের উত্তরই শুধু দিতে পারবে চ্যাটজিপিটি, তা নয়, ছবিতে কী আছে সেটার বিবরণ ও ব্যাখ্যা চাইলে সেটাও দিতে পারবে। এই নতুন ইনপুটের ধরনকে বলা হচ্ছে মাল্টিমোড এআই প্রযুক্তি। তবে এখন পর্যন্ত চ্যাটজিপিটি লেখাই আউটপুট দিতে পারে, ছবি নয়। তাই পুরোপুরি মাল্টিমোড বলা যাচ্ছে না।

ভুল তথ্য কমবে অর্ধেকে

জিপিটি-৪ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ব্যবহার করলেও তথ্য হালনাগাদ এখনই করছে না ওপেনএআই। তাই আগের মতোই ২০২১ সালের পরের কোনো তথ্য চ্যাটজিপিটি জানে না। তবে ওপেনএআই জানিয়েছে, আগের চেয়ে ৪০ শতাংশ কম ‘হ্যালুসিনেশন’ দেখবে অর্থাৎ বানোয়াট ভুল তথ্য দেওয়ার প্রবণতা আগের চেয়ে অর্ধেকে নামিয়েছে তারা। যারা চ্যাটজিপিটি প্লাস বা এপিআই অ্যাকসেস সেবা ব্যবহার করছে, তারা অবশ্য চাইলে নিজের ডাটাসেট দিয়ে একে আরো স্মার্ট করে নিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে অবশ্য অন্য কেউ অ্যাকসেস করতে পারবে না। যাতে ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক ডাটাসেট কেউ ইচ্ছা করে প্রবেশ না করাতে পারে সে জন্যই ফিচারটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি।

ভাষান্তর থেকে সফটওয়্যার তৈরি

চ্যাটজিপিটির বাইরেও জিপিটি-৪ প্রযুক্তি অন্যান্য এআই নির্মাতারা চাইলেই ব্যবহার করতে পারবেন। ওপেনএআই বলছে, জিপিটি-৪ ব্যবহার করে দ্রুত অত্যন্ত সাবলীল ভাষান্তর করা সম্ভব, লেখার সারমর্ম করা বা কাঠখোট্টা ডকুমেন্ট পড়ে সেটা থেকে সহজবোধ্য ব্যাখ্যা তৈরি, কাস্টমার কেয়ার বা ট্রেনিং চ্যাটবট তৈরি, ছবি বা ভিডিও তৈরির এআইকে সহায়তাকারী ইনপুট সিস্টেম, এমনকি চাইলে বড়সড় সফটওয়্যার তৈরির মতো কাজও জিপিটি-৪-এর মাধ্যমে করা সম্ভব।

আছে আরো কিছু

এর মধ্যেই মাইক্রোসফট বিং জিপিটি-৪ ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। ডুয়োলিঙ্গো তাদের ভাষা শিক্ষার টুল হিসেবে ব্যবহার করছে জিপিটি-৪ ভিত্তিক চ্যাটজিপিটি সেবা। স্ট্রাইপ, খান একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ব্যবহৃত হচ্ছে জিপিটি-৪। তবে যারা এপিআই অ্যাকসেস নিয়ে নিজের এআইয়ে জিপিটি-৪ কাজে লাগাতে চাচ্ছে, তাদের আরো একটু সময় অপেক্ষা করতে বলেছে ওপেনএআই। আপাতত বিং চ্যাটই জিপিটি-৪ পরীক্ষা করার সবচেয়ে সহজ ও ফ্রি উপায়, তবে যারা দৈনন্দিন কাজে চ্যাটজিপিটি কাজে লাগাচ্ছে তাদের চ্যাটজিপিটি প্লাস সাবস্ক্রিপশন কিনে নেওয়াই সমাচীন। আগামী দিনে জিপিটি-৪-এর দেখা মিলবে অগণিত সব সেবায়, সেটা এখনই পরিষ্কার।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement