২৯ মার্চ, ২০২৪, শুক্রবার

পদ্মা সেতুর অস্তিত্বে কেএসআরএমের অংশীদারত্ব : শাহরিয়ার জাহান রাহাত

Advertisement

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের গৌরবের প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক চেষ্টা ও যোগ্য নেতৃত্বে নিজ অর্থায়নে এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে; যা দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন। এতে বদলে যাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থা। শিল্পায়নের বিপ্লব ঘটবে। বাড়বে মানুষের জীবনযাত্রার মান। যোগাযোগব্যবস্থায় আসবে আমূল পরিবর্তন। দেশের অন্যতম দুই স্থলবন্দর ভোমরা ও বেনাপোলের কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে কয়েকগুণ।

ব্যবসাবাণিজ্যে আসবে গতি। এই স্বপ্নের সেতু খুলবে অর্থনীতির নতুন দ্বার। যার প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতে। এতে দেশের দুই অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে তৈরি হবে মেলবন্ধন। পদ্মা সেতু কী ধরনের মেলবন্ধন ঘটাতে যাচ্ছে এবং পদ্মা সেতুতে দেশীয় ইস্পাত কোম্পানির অংশগ্রহণ এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গণমাধ্যম এর পক্ষ থেকে কথা হয় কেএসআরএমের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক-ডিএমডি শাহরিয়ার জাহান রাহাতের সঙ্গে। আলাপচারিতায় পদ্মা সেতুতে দেশীয় কোম্পানি হিসাবে কেএসআরএমের ইস্পাত ব্যবহারসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। স্বপ্নের ‘পদ্মা সেতু’ জাতীয় অর্থনীতিতে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি অবদান রাখবে বলেও মনে করেন এ ব্যবসায়ী। পদ্মা সেতুতে দেশীয় শুধু দুটি কোম্পানির রড ব্যবহার করা হয়েছে। সেই হিসাবে কেএসআরএম দ্বিতীয় বৃহত্তম সরবরাহকারী। এছাড়া কেএসআরএম হচ্ছে সর্বপ্রথম রড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের শর্তহীন রড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানও কেএসআরএম। সেই হিসাবে এটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গৌরব আর অহংকারের। আর এসবের মূল কারণ হলো-মান নিয়ন্ত্রণে আমাদের আপসহীনতা।

কেএসআরএম যে কোনো প্রতিকূলতায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড রক্ষা করেই রড তৈরি করে। পদ্মা সেতুতে সর্বপ্রথম শর্তহীন রড সরবরাহের কার্যাদেশ আমাদের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাসকে আরও সুসংহত ও দৃঢ় করেছে। উদ্যোক্তা হিসাবে আমাদেরও আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। শাহরিয়ার জাহান রাহাত আরও বলেন, আমাদের জানামতে, দেশের আরও অনেক ইস্পাত নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গৌরবের পদ্মা সেতুতে রড সরবরাহের আগ্রহ দেখিয়েছে। এমন অহংকারের অংশীদার কে না হতে চায়! কিন্তু পদ্মা সেতু নির্মাণ কর্তৃপক্ষের শর্ত ও মান রক্ষা করতে পারেনি অনেক প্রতিষ্ঠান। সেতু নির্মাণ কর্তৃপক্ষ মান রক্ষার ক্ষেত্রে ছিল আপসহীন ও অনমনীয়। তারা উৎপাদন থেকে সরবরাহ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করেছে। যাচাই-বাছাই করা হয়েছে রড উৎপাদনের কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে উৎপাদন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ক্ষেত্রে। সরবরাহকারী হিসাবে এসব ধাপ অতিক্রম করতে হয়েছে কেএসআরএমকে। মান রক্ষার সব ধাপে উত্তীর্ণ হতে হয়েছে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই। এরপর পদ্মা সেতুতে রড সরবরাহে একমাত্র শর্তহীন অনুমোদন পেয়েছে কেএসআরএম।

রড সরবরাহের আগে কেএসআরএম কারখানায় উৎপাদনের প্রতিটি ধাপ সরেজমিন দেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। কাঁচামালের মানও পরীক্ষা করেছে ওই বিশেষজ্ঞদল। সর্বশেষ তাদের শর্ত অনুযায়ী রড উৎপাদন হয়েছে কি না, তাও যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। সব ধাপেই কেএসআরএমের রডের মান রক্ষায় সমর্থ হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্পে রড সরবরাহ কেএসআরএমের জন্য অনেক বড় অর্জন। এ যেন পদ্মা সেতুর অস্তিত্বে কেএসআরএমের অংশীদারত্ব। প্রমত্তা পদ্মা জয়ের গর্বিত অংশীদার হতে পেরে আমরা কেএসআরএম পরিবার অনেক খুশি। পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি স্বপ্ন এবং চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক যখন তাদের জায়গা থেকে একটি মিথ্যা মনগড়া অপবাদ দিয়ে সরে যায়, তখন প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থ থেকে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেন। তখন অনেকেই বিভিন্ন রকমের মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু আজ আমাদের মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববাসীকে আমরাও জয় করতে পারি। এর মাঝে আবার বিশ্বব্যাংকসহ অনেক দেশ এগিয়ে এলেও তিনি তা বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশের আত্মসম্মান বজায় রেখে নিজের দেশকে বিশ্বদরবারে এক অনন্য অবস্থায় পৌঁছে দিয়েছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement