২৬ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

ফরিদপুরে ভেঙে পড়ল নির্মাণাধীন ব্রিজ

Advertisement

ফরিদপুরের নগরকান্দায় তিন কোটি ৭৭ লাখ টাকার একটি নির্মাণাধীন ব্রিজ ভেঙে পড়েছে। ২৪ মার্চ (শুক্রবার) দুপুরে নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়ের মাঝিকান্দা-তালমার খালের ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজের পাটাতন ঢালাইয়ের সময় এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। নির্মাণাধীন ব্রিজ এভাবে ভেঙে পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তড়িঘড়ি কাজ করার ফলে এমন ঘটনা ঘটেছে।

ব্রিজের তদাকরী কর্মকর্তা নগরকান্দা উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মো. মিরান হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ৩৯ মিটার ব্রিজটির তিনটি পাটাতন (স্ল্যাব) করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রিজের দুই মাথার দুটি পাটাতন ঢালাইয়ের কাজ শেষে হয়েছে। কিন্তু মাঝের পাটাতন ঢালাইয়ের জন্য দোতলা মাচা পাতা হয়। প্রথমে ১০ ফুট করে বল্লি (গাছের খুঁটি বিশেষ যা দিয়ে পাইলিং করা হয়) বসিয়ে একটি কাঠের মাচা পাতা হয়। ওই মাচার ওপরে আবারও আট ফুট করে বল্লি বসিয়ে তার ওপরে আরেকটি মাচা পেতে মাঝের পাটাতন ঢালাইয়ের কাজ শুরু করি। পরে মাঝের স্ল্যাবের ঢালাইসহ দোতলা মাচা ভেঙে পড়ে। এখন পুনরায় আবার নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।  

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ব্রিজের নির্মাণকাজ চলাকালে ঢাকা থেকে প্রজেক্ট ডাইরেক্টর (পিডি) মো. বাদশা মিয়া পরিদর্শনে আসেন। তিনি এসে ব্রিজের  পাটাতন ঢালাইয়ের জন্য যেভাবে মাচা পাতা হয়েছে তাতে আপত্তি জানান। পিডি দোতলা মাচা পেতে মাঝের পাটাতন দ্রুত ঢালাই দেওয়ার নির্দেশ দেন। আমার ঠিকাদারী জীবনে দোতলা মাচা পেতে ব্রিজের পাটাতন ঢালাই কোনো দিন দেইনি, বা কাউকে দিতে দেখিনি। পরে পিডির নির্দেশমতো দোতলা মাচা পেতে ঢালাই দিতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটে। এখন আমার ব্যক্তিগত খরচে আবার ওই পাটাতন ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেছি। এতে আমার অনেক টাকা লস হবে।   

তবে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তড়িঘড়ি করে কাজ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজের শুরু থেকে নানা অনিয়ম করা হচ্ছে। ব্রিজের পিলারগুলোও বাঁকা হয়ে আছে। অথচ উপজেলা প্রকৌশলীকে কখনো সাইটে আসতে দেখিনি। কাজ চলাকালে তদারকির অনেক অভাব ছিল। অথচ এখন হঠাৎ ব্রিজটি যখন ভেঙে পড়েছে, তখন বড় বড় অফিসার আসছেন। এখন আবার ভেঙে পড়া ব্রিজের কাজ তড়িঘড়ি করে সংস্কার করা হচ্ছে। এতে কাজের মান কেমন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

নগরকান্দা উপজেলা প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন ফোনে বলেন, আমি এখন ব্যস্ত আছি। ব্রিজ ভেঙে পড়ার বিষয়ে পরে কথা হবে জানিয়ে তিনি এড়িয়ে যান। 

তবে ফরিদপুরের এলজিইডির (স্থানীয় সরকার বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুজ্জামান খাঁন বলেন, স্টেজিং ভালো না করায় এমন ঘটনা ঘটেছে। নিচের গোড়াটা যেভাবে করার দরকার ছিল সেভাবে হয়নি বিধায় এমনটা হয়েছে। এটা একজন ঠিকাদারের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ ক্ষতির দায়ভার ঠিকাদারকেই নিতে হবে। 

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement