গত চার বছর পূর্বে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া অবস্থায় প্রেম করে বিয়ে। বরগুনা সদর উপজেলার দক্ষিণ হেউলিবুনিয়া গ্রামের গরীব দিনমজুর আঃ মন্নান ফকিরের মেয়ে শারমিন আক্তার কে আমতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার জন্য ভর্তি করা হয়। বিদ্যালয়ে যাওয়ার পড় থেকে ঐ এলাকার পারভেজ নামে কিশোরের সঙ্গে গড়ে ওঠে প্রেম ও অনৈতিক সম্পর্ক। এ নিয়ে বিদ্যালয়ে কানাঘুষা চললে এক পর্যায় শিক্ষক ও এলাকার মোড়লদের মধ্যস্থতায় শেষ পযর্ন্ত তাদের বিবাহ সম্পাদন হয়। বিয়ের পর থেকেই শারমিনের জীবনে নেমে আসে যৌতুকের দাবী ও নির্যাতন। গরীব বাবা ও পানের বরজের শ্রমিক মা এনজিও থেকে দেড় লক্ষ টাকা যৌতুক দিয়ে মেয়ে শারমিনের জীবন প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতে পারেনি। মেয়ের নিথর দেহটি সদর হাসপাতালের লাশ ঘরে রেখে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বললো আত্মহত্যার প্ররোচনায় মারা যাওয়া শারমিনের মা ও তার শ্রমিক ভাই এবং তার আত্মীয় পরিজন।
বরগুনা সদর হাসপাতালে গিয়ে শারমিনের চাচা নাসির উদ্দিন কেটিভি প্রতিদিন কে বলেন, গত কয়েকদিন যাবৎ শারমিনকে শাররীক নির্যাতন করে ঘরে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। কারণ হিসেবে তিনি কেটিভি প্রতিদিন কে বলেন, শারমিন ও পারভেজ প্রেম করে স্থানীয় শালিষ বিচারে তাদের বিয়ে হয়।
শারমিনের পরিবার ছিল গরীব আর স্বামী পারভেজের বাবা আমতলী গ্রামের জাকির হোসেন ছিল স্বচ্ছল। জাকির হোসেন প্রথম থেকেই এই বিয়ের বিরোধিতা করে আসছিল। ফলে শারমিন শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নিকট আপন হয়ে উঠতে পারে নাই। এদিকে স্বামী পারভেজ বিভিন্ন সময় যৌতুক নেয়ার পরেও তার চাহিদা পূরণ করতে না পারায় অন্যত্র পরকিয়া জড়িয়ে পরে এবং শারমিনের উপর নির্যাতন করতে থাকে। এই পরকিয়া ঘটনা নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্বে স্ত্রীকে আত্মহত্যা প্ররোচনার পথে বাধ্যকরে স্বামী পারভেজ ও তার পরিবার।
শারমিনের অন্য আরেক চাচা সিদ্দিক কেটিভি প্রতিদিন কে বলেন, বরগুনা শহরে বসে গতকাল বিকেল তিনটার দিকে শুনতে পাই শারমিন মারা গেছে। হাসপাতালে এসে দেখি শারমিন একা পড়ে আছে তার স্বামী, শ্বশুরবাড়ির কেউ নেই। হাসপাতালের লোকজনের মুখে শুনেছি লাশ রেখে তারা পালিয়ে গেছে। বিভিন্ন সময় নির্যাতন করার ফলে শারমিন গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।
এ ব্যাপারে বরগুনা সদর থানার উপ পরিদর্শক মোঃ আলমগীর হোসেন কেটিভি প্রতিদিন কে বলেন, পারিবারিক কলহে এই ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় লোকজনের কাছে জানতে পেরেছি। লাশের সুরতহাল করার সময় হাত পায়ে রশি দিয়ে বাধার মত লাল দাগ দেখতে পেয়েছি। ময়নাতদন্তের পরে আরো অধিকতর তদন্ত করে সঠিক রহস্য উন্মোচন করা হবে।