২৫ এপ্রিল, ২০২৪, বৃহস্পতিবার

ভারত-পাকিস্তানের একটির বিপক্ষে জিততে পারলে সেটিই হবে অঘটন : সাকিব

Advertisement

সাকিব আল হাসান এমনই! সব সময় মাটিতেই পা রাখেন। প্রত্যাশার লাগামটা রাখেন নিজের হাতেই। আবেগের বাড়াবাড়ি ব্যাপারটা ঠিক যায় না বাংলাদেশ অধিনায়কের সঙ্গে। তাইতো ভারত-পাকিস্তানের মতো দুটো বড় দলের সঙ্গে লড়াইয়ের আগে মাথা ঠান্ডা রাখছেন। নিজেদের যোগ্যতার ব্যাপারটা এক মুহূর্তের জন্যও ভুলে যাচ্ছেন না!

সমর্থকরা যতোই ভারত-পাকিস্তান বধের চিন্তায় ব্যস্ত থাকুন, সাকিব বুঝে শুনে কথা বলছেন। বুধবার ভারতের সঙ্গে লড়াই। অ্যাডিলেড ওভালে সেই ম্যাচটি খেলার আগে জয়-পরাজয়ের চিন্তা দূরে রেখে সাকিব জানিয়ে দিলেন ভারত-পাকিস্তান দুই দলের একটির বিপক্ষে জিততে পারলে সেটিই হবে অঘটন!

অবশ্য পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে এমনটা মনে হতেই পারে। বাংলাদেশ-ভারত টি-২০ লড়াইয়ের গল্পটা বড্ড একপেশে। যেখানে ম্যাচ হয়েছে ১১টি। বাংলাদেশ মাত্র ১টি জয়েই থেমে আছে। বাকি দশটিতেই জিতেছে ভারত। তাইতো সাকিব মঙ্গলবার প্রিভিউ-তে অ্যাডিলেড ওভালের প্রেস কনফারেন্স রুমে বসে বললেন, ‘পরবর্তী টার্গেট দুটো ম্যাচ খুবই ভালোভাবে খেলা। যদি কোনো ম্যাচ জিততে পারি সেটা আপসেট হিসেবেই গণ্য হবে। এবং সে আপসেট টা যদি করতে পারি তাহলে আমরা খুশি হব। আর না করতে পারলেও খুব বেশি কিছু একটা বলার নেই।’

কেন এমন ভাবনা সেটিও পরিস্কার করলেন সাকিব। জানালেন, এটাই বাস্তবতা। নিজেদের লক্ষ্য শুধুই ভাল ক্রিকেট খেলা, ‘বাকি দুই দল যদি দেখেন তারা আমাদের থেকে অবশ্যই ভাল। বাট আমরা যদি ভালো খেলি আমাদের যদি দিন থাকে, কেন জিততে পারবো না। এই বিশ্বকাপে আমরা দেখেছি আয়ারল্যান্ড ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানকে জিম্বাবুয়ে হারিয়ে দিয়েছে। ওরকম একটা রেজাল্ট হলে আমরা অবশ্যই খুশি হব।’

দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে চাপে আছে ভারতও। এ অবস্থায় তাদেরও জয় চাই। বিরাট কোহলিরা একটা জয়ের জন্য কতোটা মরিয়া সেটা আঁচ করতে পারছেন সাকিব। বাঙলাদেশ অধিনায়ক বলছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় ভারতীয় দল খুবই ভালো একটা বোলিং অ্যাটাক। আপনি যদি দেখেন প্রতিটা ম্যাচই তারা ১৬০-৭০ মধ্যেই প্রতিটা দলকে বেঁধে রেখেছে। তার মানে খুবই ভালো বোলিং করছে। আমাদের অবশ্যই খুবই ভালো ব্যাটিং করতে হবে, ১৬০ বা ১৭০ রান করতে গেলে। যেটা দেখা যাচ্ছে এই বিশ্বকাপে একটা পার স্কোরের মত। যারা বেশি করছে তারাও এরকম করছে, যারা কম করছে তারাও এর থেকে ১০-১৫ রান কম করছে। এরকম একটা অবস্থায় আমার কাছে মনে হয় আমাদের খুবই ভালো খেলতে হলে ভারতের বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে ভালো করতে হবে। কেননা তাদের বিশ্বমানের খেলোয়াড় রয়েছে। আমাদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে হবে আসলে।’

সেই ভাল খেলার অস্ত্র আছে সাকিবের কাছে। নেদারল্যান্ডস আর জিম্বাবুয়ে দুটো দলের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে জয়ের নায়ক তাসকিন আহমেদ। বল হাতে এই পেসার অজি কন্ডিশনে রীতিমতো আগুন ঝরাচ্ছেন। সঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমানও ফিরে এসেছেন চেনা ছন্দে। আছেন হাসান মাহমুদও। সবচেয়ে বড় কথা দুঃসময় কাটিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তও যোগ্যতার পরিধিটা দেখিয়েছেন। খেলেছেন ৫৫ বলে ৭১ রানের দেখার মতো এক ইনিংস।

হাসান মাহমুদের প্রসঙ্গ উঠতেই সাকিব বললেন, ‘হাসান মাহমুদ এতো অল্প বয়সে বিশ্বকাপের মত বড় আসরে প্রতিনিধিত্ব করছে এটা ওর জন্য একটা বড় ব্যাপার। আমরা সবাই বিশ্বাস করি ওর বয়সটা না যতবেশি তার থেকে ওর অনেক ভাল মাথা। গেম সেন্স এবং গেম রিড করতে পারে ভাল। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের একটা বড় প্রত্যাশা হচ্ছে বলে মনে করি।’

ভারত এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে অ্যাডিলেডে বাংলাদেশ দল কেমন করে সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে দুটো জয় পুরো দলটার চেহারাই পাল্টে দিয়েছে। নির্ভার হয়েই মাঠে নামার অপেক্ষায় টাইগাররা। কিছু হারানোর ভয় যখন সঙ্গে না থাকে তখন তো উপভোগের একটা মন্ত্রও মেলে! সেই মন্ত্রেই আপসেটের প্রতীক্ষায় সাকিব, গোটা বাংলাদেশও!

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement