সংসদ সদস্যের পদ হারানোর পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাহুল গান্ধী। জানালেন, মোদি-আদানি সম্পর্ক নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলাতেই নিশানা করা হয়েছে তাকে। সেই সঙ্গে সাবেক কংগ্রেস সভাপতি প্রশ্ন তুললেন দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আদানিদের ঘনিষ্ঠ চীনা শিল্প সংস্থার ‘অংশগ্রহণ’ নিয়েও।
রাহুল গান্ধী শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই তার বিমানে সফরসঙ্গী আদানির ছবি নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম। এরপর দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরের লিজ নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে আদানিকে দেওয়া হয়েছিল।’
মোদির সঙ্গে আদানির সম্পর্ক ‘বহু দিনের পুরনো’ বলে দাবি করে রাহুল বলেন, ‘তবে আমি জানি না উনি (আদানি) কোথা থেকে এসে জুটলেন।’ মোদির রাজ্যের আদালতের রায়কে হাতিয়ার করে তার সংসদ সদস্য পদ খারিজ করা হলেও দেশের স্বার্থে তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন জানিয়ে রাহুল বলেন, ‘আমি ভয় পাই না। ওরা (বিজেপি) এত দিনেও সেটা বুঝতে পারেনি।’
‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে বৃহস্পতিবার রাহুলকে দুই বছরের জেলের সাজা দেন গুজরাতের সুরাত জেলা আদালত। তারই ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শুক্রবার রাহুলের সংসদ সদস্য পদ খারিজ করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। সংবাদ সম্মেলনে রাহুল দাবি করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার সংসদে পরবর্তী বক্তৃতা নিয়ে ভীত ছিলেন। তাই এমন করা হল।’
আদানিদের একটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সংস্থা কোন পথে রাতারাতি ২০ হাজার কোটি রুপি পেল সে প্রশ্নও তুলেছেন রাহুল। কয়েক মাস আগে শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ পর্ষদের চেয়ারম্যান যে মোদির বিরুদ্ধে বিদ্যুৎপ্রকল্পের কাজ আদানিকে দেওয়ার জন্য কলম্বোর ওপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছিলেন, মনে করিয়ে দিয়েছেন সে কথাও।
ব্রিটেন সফরে গিয়ে রাহুল ‘দেশকে অপমান’ করেছেন বলে বিজেপির পক্ষ থেকে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা নস্যাৎ করে ওয়ানেড়ের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি দেশবিরোধী কোনো মন্তব্য করিনি। ওদের (বিজেপি) সমস্যা হলো, আদানির অপমানকে দেশের অপমান ভাবেন।’
প্রসঙ্গত, লন্ডন থেকে ফিরে গত বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে ঢোকার আগে ওয়েনাড়ের তৎকালীন কংগেস সংসদ সদস্য রাহুল বলেছিলেন, ‘আমি (লন্ডনের আলোচনা সভায়) ভারতবিরোধী কিছুই বলিনি। যদি তারা সুযোগ দেন, তবে আমি সংসদের ভেতরেও সে কথা বলব।’ শনিবার সংবাদ সম্মেলনে রাহুল বলেন, ‘আমি সংসদে বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বলতে দেওয়া হয়নি। বলতে চেয়ে প্রথম চিঠি দিয়েছি। দ্বিতীয় চিঠি দিয়েছি। স্পিকারের সঙ্গে দেখাও করেছি। কিন্তু বলার সুযোগ পাইনি।’
