১৯ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

যৌন কেলেঙ্কারি কেড়ে নিল ‘মিস্টার ম্যাকম্যাহনের’ সিংহাসন

Advertisement

পেশাদার রেসলিং জগতের এক কিংবদন্তি চরিত্র ভিন্স ম্যাকম্যাহন। ‘মিস্টার ম্যাকম্যাহন’ নামে খ্যাতি পাওয়া এই কুস্তিগিরের হাত ধরে শুরু হয়েছিল রেসলিংয়ের এক নতুন অধ্যায়। রেসলিংয়ের সঙ্গে বিনোদনের মিশেলে ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেইনমেন্টকে (ডব্লিউডব্লিউই) অনন্য উচ্চতায় তুলেছিলেন। তবে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হয়ে শেষমেশ রেসলিংয়ের সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করলেন তিনি।

যৌন কেলেঙ্কারির তদন্ত চলাকালে গত জুনেই ডব্লিউডব্লিউই’র চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন ম্যাকম্যাহন। গত ২২ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে রেসলিং থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। ডব্লিউডব্লিউই’র শীর্ষ পদে জুনেই স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন তার মেয়ে সাবেক রেসলার স্টেফানি ম্যাকম্যাহন।

১৯৮২ সালে বাবা ভিন্স ম্যাকম্যাহন সিনিয়রের কাছ থেকে ডব্লিউডব্লিউই (তখনকার নাম ছিল ডব্লিউডব্লিউএফ) কিনে নিয়েছিল ম্যাকম্যাহন। নিজের কর্তৃত্বে নেওয়ার পর ডব্লিউডব্লিউই’র খোলনলচে পাল্টে দিয়েছিলেন তিনি। টেলিভিশন দুনিয়ায় প্রতিযোগিতাকে এমনভাবে ছড়িয়ে দেন যে, অল্প সময়ে তা বিশ্বজুড়ে বিনোদনের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়। প্রতিযোগিতার আবেদন বাড়াতে আকর্ষণীয় নানা বিষয় যোগ করেন, মিউজিক, স্ক্রিপ্টেড ফাইট, তারকা ফাইটারদের মেগা শোডাউনের আকর্ষণে টিভির পর্দায় আটকে থাকতেন দর্শক।

বিশ্বজুড়ে ৩০টি ভাষায় ১৫০টিরও বেশি দেশে টিভির পর্দায় দেখা যায় ডব্লিউডব্লিউই। সাড়া জাগানো এই প্রতিযোগিতা থেকে অঢেল অর্থ আয় করেছেন ম্যাকম্যাহন। ফোর্বসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২.৪ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি রয়েছে।

দীর্ঘ ৪০ বছর ডব্লিউডব্লিউই’র শীর্ষ পদে আসীন থাকার পর অবশেষে সেই পদ ছাড়তে বাধ্য হলেন ম্যাকম্যাহন। গত এপ্রিলে টার বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে ডব্লিউডব্লিউই বোর্ড। অভিযোগ? প্রতিষ্ঠানের সাবেক এক কর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি, সে সম্পর্কের খবর ধামাচাপা দিতে এবং ওই কর্মীর মুখ বন্ধ রাখতে প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার ঘুষ প্রদান করেছিলেন।

অভ্যন্তরীণ তদন্তে থলের বেড়াল বেরিয়ে আসে। ম্যাকম্যাহন এবং ডব্লিউডব্লিউই’র নির্বাহী জন লরিনাইটিসের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের আরও বেশ কয়েকজন নারী কর্মী অসদাচরণের অভিযোগ করে। তদন্তে জানা যায়, ডব্লিউডব্লিউই’র দুই কর্তা তাদের মুখ বন্ধ করতেও মোটা অঙ্কের ঘুষ প্রদান করেন, এজন্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১৩ কোটি টাকা খরচ করেন তারা। এই তদন্ত চলাকালেই নিজের পদ থেকে ইস্তফা দেন ৭৬ বছর বয়সী ম্যাকম্যাহন।

আগেও বেশ কয়েকবার যৌন কেলেঙ্কারিতে নাম এসেছে ম্যাকম্যাহনের। ১৯৯২ সালে রিটা চ্যাটারটন নামের এক নারী রেফারি তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন। ২০০৬ সালে ফ্লোরিডার এক ট্যানিং বার কর্মী ম্যাকম্যাহনকে যৌন হয়রানির জন্য দায়ী করেছিল। সেই দুই ঘটনায় পার পেয়ে গেলেও তৃতীয়বারে আর শেষ রক্ষা হলো না। রেসলিং থেকে চিরতরে বিদায় নিয়েই করতে হলো প্রায়শ্চিত্ত।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement