২০ এপ্রিল, ২০২৪, শনিবার

শাবান মাসের আমল ও ফজিলত

Advertisement

হিজরি চান্দ্রবর্ষের অষ্টম মাস শাবান। শাবান শব্দের অর্থ দূরে ও কাছে, মিলন ও বিচ্ছেদ। আরবিতে এ মাসের পূর্ণ নাম হলো ‘আশ শাবানুল মুআজজম’ অর্থ মহান শাবান মাস। মুসলমানদের মধ্যে খুশি-আনন্দ ও সংবেদন-চৈতন্যের আভা ছড়িয়ে পড়ে এ মাসে।

শাবানের আরেকটি অর্থ হলো মধ্যবর্তী সুস্পষ্ট। যেহেতু এ মাসটি রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী, তাই এই মাসকে শাবান মাস নামকরণ করা হয় (লিসানুল আরব, ইবনে মানজুর রহ.)। এসময় বছরের শ্রেষ্ঠ মাস পবিত্র রমজানের আগমনী বার্তা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যায়। আহ্লাদের ভিন্ন রকম হিল্লোল দেখা দেয় সবার কাজে-কর্মে ও আচরণ-উচ্চারণে। 

শাবান মাসে কিবলা পরিবর্তন হয়

বায়তুল মুকাদ্দাস ছিল মুসলমানদের প্রথম কিবলা। মিরাজের রাতে মুসলমানদের ওপর নামাজ ফরজের পর থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে নামাজ আদায় করতেন তারা। মুহাম্মদ (সা.) হৃদয় দিয়ে চাইতেন, কাবাঘর হোক মুসলমানদের কিবলা। পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর বানানো ঘর হোক সেজদার নিদর্শন। এজন্য মুহাম্মদ (সা.) নামাজে দাঁড়িয়ে বারবার আকাশের দিকে তাকাতেন। মনের আকুল প্রার্থনা ব্যক্ত করতেন।

১৬ মাস পর বায়তুল মুকাদ্দাসের পরিবর্তে কাবাঘর কিবলা হিসেবে ঘোষিত ও নির্ধারতি হয় এই মাসে। কোরআনে বাঙ্ময় হয়েছে এভাবে, ‘বারবার আপনার আকাশের দিকে মুখমণ্ডল আবর্তন আমি অবশ্যই লক্ষ করি। সুতরাং কিবলার দিকে আপনাকে প্রত্যাবর্তন করে দেব, যাতে আপনি সন্তুষ্ট হন। অতএব আপনি মসজিদুল হারামের (কাবাঘর) দিকে চেহারা ঘোরান। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, ওই (কাবা) দিকেই মুখ ফেরাও।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৪৪)

শাবানে রাসুল (সা.) নফল রোজা রাখতেন

রমজানের রোজা মুসলমান, বালেগ, সুস্থ মানুষের ওপর ফরজ। রমজান ছাড়া ভিন্ন মাসে ফরজ রোজা নেই। তবে অন্য মাসে ও বিশেষ দিনে নফল রোজা রাখায় সওয়াব রয়েছে। রাসুল (সা.) ও সেসব নফল রোজা রাখতেন। সাহাবিদের উদ্বুদ্ধ করতেন। রাসুল (সা.) শাবান মাসে সবচেয়ে বেশি নফল রোজা রাখেতেন। অন্য কোনো মাসে এ পরিমাণ রোজা রাখতেন না।

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী (সা.) শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজা কোনো মাসে রাখতেন না। তিনি পুরো শাবান মাসই রোজা রাখতেন এবং বলতেন, তোমাদের মধ্যে যতটুকু সামর্থ্য আছে ততটুকু (নফল) আমল করো, কারণ তোমরা (আমল করতে করতে) পরিশ্রান্ত হয়ে না পড়া পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা (সওয়াব) দান বন্ধ করেন না। নবী (সা.)-এর কাছে সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় নামাজ ছিল তা-ই, যা যথাযথ নিয়মে সর্বদা আদায় করা হতো, যদিও তা পরিমাণে কম হতো এবং তিনি যখন কোনো (নফল) নামাজ আদায় করতেন পরে তা অব্যাহত রাখতেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৭০)

নবী করিম (সা.) শাবান মাসে অধিকহারে নফল রোজা রাখতেন। উম্মে সালমা (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে শাবান ও রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৩৬)

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement