২৯ মার্চ, ২০২৪, শুক্রবার

বিদ্যমান আইনেই ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব : সিপিডি

Advertisement

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)  এর গবেষক ও আলোচকরা বলছেন, ই–কমার্সের জন্য নতুন আইনের দরকার নেই। বিদ্যমান আইনে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সততা ও সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। তাহলে এ ধরনের অনিয়ম ঠেকানো যাবে।

শনিবার সিপিডি আয়োজিত ‘ই-কমার্স খাতের চ্যালেঞ্জ : সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট ও করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সংস্থাটির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান, ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, বিডি জবসের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, চালডাল ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিম আলিম, শপ আপের চিফ অব স্টাফ জিয়াউল হক, অ্যাসিক্স বিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফসানা আসিফ, ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহিদ প্রমুখ।

ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম বলেন, দেশে আইনের অভাব নেই, নতুন আইনেরও দরকার নেই। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা যদি বাড়ানো যায় এবং সেই প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সততার সঙ্গে কাজ করে তাহলে এ ধরনের অনিয়ম ঠেকানো যাবে।

বিভিন্ন আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থাগুলো ‘পদে পদে অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে’ এমন মন্তব্য করে তিনি ব্যারিস্টার তানজীব বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশন কোন অবস্থায় পদক্ষেপ নেবে তা কমিশনের আইনে বলা আছে। কিন্তু ই-কমার্সের বিষয় প্রতিযোগিতা কমিশনের যখন যেখানে তৎপর হওয়ার দরকার ছিল, তারা তখন বসেছিলেন, পদক্ষেপ নেন নাই। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রস্তুত ছিল না।

ফাহিম মাশরুর বলেন, দেশে বড় একটি সমস্যা বেকারত্ব। অসংখ্য তরুণ বেকার ও কর্মহীন। তারাই ই-কমার্সে বিনিয়োগ করছে। চাকরি না থাকলে তো এখানে আসবেই। ব্যাংকের সুদের হার কম। শেয়ারবাজারও নিরাপদ নয়। তাহলে তরুণ জনগোষ্ঠী যাবে কোথায়?

নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন মূল সমাধন নয় জানিয়ে ফাহিম মাশরুর বলেন, ‌একটা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করে ফেললাম, আর সঙ্গে সঙ্গে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটা ভাবা ঠিক হবে না।

জিয়াউল হক বলেন, এই যে ব্যাংকিং চ্যানেলে এত টাকা লেনদেন হলো, ব্যাংকের ভূমিকা কী ছিল। ই-কমার্সকে যদি নজরদারি করা হয়, তাহলে নতুন আইনের প্রয়োজন হবে না।

সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জসহ বেশ কয়েকটি ই-কমার্স কোম্পানি দেশের অর্থনীতিতে অনেক বড় বিপদ সংকেত দিয়েছে। ইভ্যালিসহ সম্প্রতি যা ঘটেছে তা সকল পক্ষের লোভের কারণেই হয়েছে। ই-কমার্সে যা কিছু ঘটেছে, তাতে একক কাউকে দোষ না দিয়ে বলা যায়, এখানে সবারই দোষ ছিল। যে টাকা লোপাট হয়েছে, এখন জরুরি সে টাকা ফিরিয়ে আনা।

আবদুল ওয়াহিদ বলেন, আমরা তিন বছর আগেই সরকারকে বলেছিলাম এ ধরনের একটা জটিলতা তৈরি হতে পারে। ই-কমার্সে যে স্বচ্ছতা নেই, তা সরকারকে জানানো হয়েছিল। ইভ্যালিসহ অন্যদের বিজনেস মডেল নিয়ে অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু তখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মধ্যে বড় ধরনের সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে জানান তিনি।

রেহমান সোবহান বলেন, দেশে সুশাসনের মারাত্মক ঘাটতি আছে। সে কারণে গ্রাহকের টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটছে। আর ই–কমার্সের মাধ্যমে প্রথম এ ঘটনা ঘটেনি। এর আগেও বহুবার একই ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু বিচার হয়নি।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement