১৭ এপ্রিল, ২০২৪, বুধবার

সুনামগঞ্জে হাওরে হাঁস পালনে লাভবান হচ্ছেন খামারিরা

Advertisement

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় হাওরে হাঁস পালন করে লাভবান হচ্ছেন খামারিরা। হাওরে হাঁস পালনে খরচ তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। এ ছাড়া স্থানীয় বাজারসহ অন্যান্য জেলা-উপজেলায় হাঁস ও ডিমের দাম বেশি হওয়ায় খামার ও খামারির সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে।

এদিকে, খামারিরা এখন হাঁসার খামারের দিকেও ঝুঁকছেন। এ বছর হাঁসার দাম অন্য বছরের চেয়ে বেশি হওয়ায় এমন হাঁস পালনে খামারিদের আগ্রহও বেড়েছে। এতে করে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

জানা গেছে, এ উপজেলার শনির হাওর, মাটিয়ান হাওরসহ ছোট-বড় প্রতিটি হাওরেই হাঁসের খামার রয়েছে। প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে এর সংখ্যা। হাঁসের খামার করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এ ছাড়া হাঁস পালন ব্যাপক লাভজনক হওয়ায় অনেকেই এ পেশায় আসছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের রতনশ্রী গ্রামের খামারি সুজাত মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এবার ৬৫০টি ডিম দেওয়া হাঁস পালন করছেন তিনি। প্রতিদিন ৪০০ হাঁস ডিম দিচ্ছে। সপ্তাহে ৪০ হাজার টাকার বেশি ডিম বিক্রি করছেন তিনি।

একই গ্রামের হৃদয় তালুকদার জানান, এবার এক হাজার ৪০০টি ডিম দেওয়া হাঁস নিয়েছেন তিনি। তবে এবার মাংসের হাঁসের (হাঁসা) দাম বেশি পাচ্ছেন খামারিরা। প্রতি ১০০ হাঁসা ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কয়েক দিন লালনপালন করলেই ডিম দেওয়া হাঁস ডিম দিতে শুরু করে। এতে অর্থ আসতে থাকে। এ জন্য তিনি ডিম দেওয়া হাঁস পালন করছেন।

তিনি আরও জানান, গত জুনের বন্যায় অনেক হাঁসের খামারি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। অনেকে নতুনভাবে বিনিয়োগ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ বন্যার পর নতুনভাবে খামার করতে পারেননি। এটি না হলে খামারির সংখ্যা আরও বেড়ে যেত।

ডিম দেওয়া হাঁসের খামারি সুজাত মিয়া ও হৃদয় তালুকদারই শুধু নন, কথা হয় মাংসের হাঁস (হাঁসা) পালনকারী উজ্জ্বল মিয়ার সঙ্গেও। তিনি জানান, এবার তিন হাজার ৮০০টি হাঁসা কিনেছেন। প্রতি হাজার হাঁসা ৩৫ হাজার টাকা করে। এখন প্রতি ১০০ হাঁসা ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। এরই মধ্যে দুই হাজার বিক্রি করেছেন। বাকি হাঁসাগুলো বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান এ খামারি। এ ধরনের হাঁসা পাঁচ মাস লালনপালন করার পর বিক্রি করতে হয়। এতে ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করতে হয় বলে জানিয়েছেন উজ্জ্বল মিয়া।

স্থানীয়দের মতে, তাহিরপুরে সারা বছরই টাঙ্গুয়ার হাওরসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে পর্যটক আসেন। হাওরে আসা পর্যটকের খাবারের চাহিদার প্রথম পছন্দ হাঁসের মাংস। এ জন্য হাঁসের কদর বেড়েছে। হাওরের কিছু খাল-ডোবা লিজ দেওয়া না হলে হাঁসের খামার আরও বেড়ে যেত।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাবিব আহমেদ বলেন, ‘উপজেলায় আমাদের তালিকামতে ৫০-এর বেশি হাঁসের খামারি রয়েছেন। তবে স্বল্প মেয়াদে এবার খামারির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। হাঁসের মাংসের কদর বাড়ায় এ বছর অনেকেই শুধু মাংসের হাঁস পালন করেছেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ খামারিদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন সুবিধা দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছে।’ 

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement