২৯ মার্চ, ২০২৪, শুক্রবার

১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা

Advertisement

দেড় বছরেরও বেশি সময় পর আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন পর্যটকরা। করমজলসহ সুন্দরবনের সব স্পটেই যেতে পারবেন তারা। একইসঙ্গে সুন্দরবনের বনজ সম্পদ আহরণের জন্য পাস পারমিটও দেয়া হবে।

রোববার  বিকেলে বন বিভাগের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মো. মহসিন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিভাগীয় এই বন কর্মকর্তা বলেন, গত ১৯ আগস্ট থেকে দেশের সব পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হলেও সুন্দরবনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

আগামী ১ তারিখ থেকে সুন্দরবন খুলে দেয়া হবে কি-না, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশক্রমে আজ স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করা হয়। সভায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনে পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।

তবে একটি লঞ্চে ৭৫ জনের বেশি যাতায়াত করতে পারবেন না বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মো. মহসিন।

গত বছরের ২৫ মার্চ থেকে সুন্দরবনে পর্যটকদের যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। তবে বন বিভাগের এ কর্মকর্তা বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় সুন্দরবনের করমজল, কটকা, কচিখালী, হরবাড়িয়া, হিরণ পয়েন্ট, দুবলা ও নীলকমলসহ সমুদ্র তীরবর্তী এবং বনাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে লঞ্চ, ট্যুরবোট, ট্রলার ও বিভিন্ন নৌযানে চড়ে যেতে পারবেন দর্শনার্থীরা।

করোনা সংক্রমণ রোধে সেই নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়। একইসঙ্গে মাছ ও কাকড়া শিকারে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে ১৯ আগস্ট সারাদেশের পর্যটন কেন্দ্র খুললেও নিষেধাজ্ঞা ছিল সুন্দরবন ভ্রমণে। সেই নিষেধাজ্ঞা উঠছে আগামী ৩১ আগস্ট। ফলে ১ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে যাচ্ছে সুন্দরবনের দুয়ার।

খুলনা অঞ্চলিক বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে সাংবাদিকদের বলেন, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে সব প্রকার মৎস্য ও কাঁকড়া শিকার বন্ধ রাখার ঘোষণা রয়েছে। ওইদিন নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। ফলে মন্ত্রিপরিষদ অনুমোদিত ‘সুন্দরবন ভ্রমণ’ নীতিমালা অনুসরণ করে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। উপযুক্ত স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রত্যেকটা লঞ্চে ৭৫ জনের বেশি পর্যটক নেওয়া যাবে না। উল্লেখিত নীতিমালা অমান্য করে কোনো ট্যুর অপারেটর অধিক পর্যটক বহন বা পরিবেশ বিঘ্নিত করলে তার বিরুদ্ধে বন বিভাগ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

তিনি জানান, সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিমে কটকা, দুবলারচর, করমজল, হারবাড়িয়া, কলাগাছিয়া, কচিখালীসহ সাতটি পর্যটন স্পট রয়েছে। এসব স্থানে সাধারণত পর্যটকরা ভ্রমণে আসে।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম নাজমুল আযম ডেভিড জানান, অবশেষে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন স্পটগুলো চালু হচ্ছে। তবে কিছু শর্ত রয়েছে বনবিভাগের। আমরা সেই শর্ত মেনে নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা সুন্দরবনে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছি। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলে তা আবারও বন্ধ হয়ে যায়। সংগঠনের তালিকাভুক্ত ৬৩টি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সব মিলিয়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী কমিয়েছে। অনেকেই বেকার হয়েছেন। অবশেষে সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement