২৬ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

Advertisement

বাঙালি জাতির জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্মরণীয় দিন আজ ১০ জানুয়ারি। ১৯৭২ সালের এই দিনে (১০ জানুয়ারি) দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পূর্ণতা পায় মহান স্বাধীনতা।

সেদিন প্রিয়নেতাকে কাছে পেয়ে দেশের সাড়ে সাত কোটি বাঙালি নতুন করে বেঁচে থাকার প্রেরণা পেয়েছিল। সেদিনই তারা শ্মশান বাংলাকে সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তোলার দীপ্তমন্ত্রে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন-‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসাবে। সেই থেকে দিনটি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসাবে পালিত হয়।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও বঙ্গবন্ধুর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতি স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ পায়নি। অবশেষে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ পায়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে অর্থাৎ ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনগামী একটি বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তিনি পৌঁছান লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে। 

সকাল ১০টার পর থেকে বঙ্গবন্ধু কথা বলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। এরপর ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন বঙ্গবন্ধু।

১০ তারিখ সকালে প্রথমে তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এ স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে তিনি আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে।

এদিন দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে তিনি ঢাকা এসে পৌঁছান। চূড়ান্ত বিজয়ের পর ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমান বন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement