৩০ এপ্রিল, ২০২৪, মঙ্গলবার

ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ : চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত হতে হবে

Advertisement

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে কেবল পুঁথিগত বিদ্যা অর্জনই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য নয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারেন। কেননা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদেরই সামনে এগিয়ে আসতে হবে।

(১৪ সেপ্টেম্বর) বুধবার ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালযয়ে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ সম্প্রতি ঢাকা কলেজের ৭৬তম অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর মাধ্যমে তাদের আগামী দিনের পৃথিবীর জন্য তৈরি করতে চান বলেও জানান তিনি।

অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে প্রযুক্তি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষতা, চিন্তাশক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আরও অনেক বিষয় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত আছে এই শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে। তাছাড়া বর্তমানে চাকরির বাজারে দক্ষতা ছাড়া চাকরি পাওয়া যায় না। সেজন্য শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি প্রবলেম সলভিং স্কিলস, ক্রিটিকাল থিংকিং, সৃজনশীলতা, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, যোগাযোগ দক্ষতা সহ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এই বিষয়গুলোকে বর্তমানে জোরালোভাবে না দেখলে আগামীর পথচলা কঠিন হয়ে পড়বে। সেজন্য শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যায় নয় বরং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের জন্যও শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

কলেজে অধ্যায়নরত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা কিভাবে নিজেদের তৈরি করতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যক্ষ বলেন, সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি তরুণ প্রজন্ম শুধুমাত্র সরকারি চাকরি কেন্দ্রিক প্রতিযোগিতায় নিজেদের ব্যস্ত রেখেছে। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে এর বাইরেও অনেক সম্মানজনক ও স্মার্ট পেশা রয়েছে। যেগুলোতে ক্যারিয়ার গড়তে পারলে পেছনে ফিরে তাকানোর প্রয়োজন হবে না। এসব বিষয় সম্পর্কে আমাদের অনেক শিক্ষার্থীরাই অবগত নয়। শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সচেতন করতে এবং এক কেন্দ্রীক চিন্তা ভাবনার বাইরের বিষয়গুলোতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সেজন্য ঢাকা কলেজে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে একটি ক্যারিয়ার ক্লাব ও বড় ক্যারিয়ার ফেস্ট করার ইচ্ছা আমার রয়েছে।

‘তাছাড়া শিক্ষার্থীরা অনেকেই রয়েছেন যারা সঠিকভাবে নিজের পেশা নির্ধারণের দিকনির্দেশনা পান না। তাদের জন্য শিক্ষকদের তত্ত্ববধানে এই কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে।’

ঢাকা কলেজের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তা রয়েছে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, ঢাকা কলেজ একটি পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এর অবকাঠামোগত উন্নয়ন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই শিক্ষা সচিব, মাউশি মহাপরিচালক ঢাকা কলেজ পরিদর্শন করেছেন। অবকাঠামোগত জরাজীর্ণতা দেখে তাঁরাও ব্যথিত হয়েছেন। শিক্ষা সচিব শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাছে প্ল্যান তৈরির জন্য চিঠি দিয়েছেন। আমরাও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আসলে ঢাকা কলেজের উন্নয়ন সবারই কাম্য। আশা করি দ্রুতই সংশ্লিষ্ট দপ্তর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

একই সঙ্গে নিজেদের মানোন্নয়নে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা ও ডিপার্টমেন্টমুখী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রচলিত শিক্ষা মানোন্নয়নের জন্য সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দিয়েছেন। তারমধ্যে ঢাকা কলেজ অন্যতম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের পড়াশোনাসহ শিক্ষার সার্বিক মান উন্নয়ন হয়েছে। একটি পুরনো সিস্টেম থেকে বের হয়ে নতুন কার্যক্রম শুরু করার ক্ষেত্রে প্রথমে কিছুটা জটিলতা থাকেই। এসব জটিলতা নিরসনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজ প্রশাসনের আন্তরিকতার কমতি নেই। যখন যারা এখানে দায়িত্ব পালন করেছেন শিক্ষার্থীদের কল্যাণে তাৎক্ষণিকভাবে সব সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করেছেন। আমাদের চেষ্টার কোনো ঘাটতি নেই। আশা করি সাত কলেজের সার্বিক কার্যক্রমে আরও গতি আসবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement