২৭ জুলাই, ২০২৪, শনিবার

অস্ট্রেলিয়ার পার্থে বাংলাদেশিদের সৃজনশীল পরিবেশনা অনুষ্ঠিত

Advertisement

ড্রামা ফেস্ট ও হিডেন ট্যালেন্টস (মিনি ফিলোসপারস) এই দুটি পৃথক পরিবেশনার সমন্বয়ে সুন্দর একটি সন্ধ্যা উপহার দিল ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম বাংলাদেশি সংগঠন বাওয়া। শিশু-কিশোরদের সৃজনশীল চলচ্চিত্র প্রদর্শন সেই সঙ্গে মঞ্চ নাটকের সাবলীল পরিবেশনা উপভোগের মোক্ষম সুযোগ করে দেন আয়োজকরা।

(১৮ জুন) শনিবার অস্ট্রেলিয়ার পার্থের বাংলাদেশিদের মনোরঞ্জন করতে এই আয়োজন করা হয়। প্রবাসের একঘেয়েমিকে পাশ কাটিয়ে মা ও মাতৃভূমির চেনা সংস্কৃতিকে নয়ন জুড়িয়ে উপভোগ করার নেপথ্যে কাজ করে বাওয়ার সাংস্কৃতিক ও সমাজ কল্যাণ নামের দুটি পৃথক দল। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় প্রবাসীদের সাড়া মেলে বেশ। পূর্বনির্ধারিত টিকিট নিয়ে পার্থের কালামুন্ডা পারফর্মিং আর্টস হলে হাজির হন দর্শনার্থীরা।

সন্ধ্যা ৬টায় পর্দা উঠে অনুষ্ঠানের। স্বাগত বক্তব্য দিয়ে সবাইকে উৎসাহ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাওয়ার চালকের আসনে থাকা এম এস এন শাহীদ রাজু। শুরুতে শিশু-কিশোরদের নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রকে প্রাধান্য দিয়ে প্রদর্শনী করা হয়। সরেজমিনে দেখা যায় প্রতিটি চলচ্চিত্রে একটি করে বার্তা দেওয়ার প্রয়াস রাখে ক্ষুদে নির্মাতারা।

দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের এ কাজে নিয়োজিত রেখে চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বাদ নেওয়ার ইচ্ছা পূরণের কথা জানিয়েছেন ক্ষুদেরা। দেখা যায়, পরিবেশ দূষণ, বন উজাড়, খাদ্যভেজাল, শিশুশ্রমের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়কে পর্দায় নিয়ে আসেন ক্ষুদেরা। তারা নিজেরাই এই চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয় করেন, স্ক্রিপ্ট, লাইট, সম্পাদনা সবকিছুতেই তাদের অংশগ্রহণ থাকে। অভিভাবকরাও তাদের সহায়তা করেন।

শিশুশ্রমের ওপর নির্মিত চলচ্চিত্রটি প্রথম পর্বের শেষাংশে রাখা হয়। প্রবাসে বেড়ে ওঠা শিশুরা সাবলীল বাংলায় অভিনয়ের দক্ষতা দেখায়, তুলে ধরে শিশুশ্রমের ক্ষতিকর দিকগুলো।

খোদেজা খাতুন খুকি নামের একজন ঢাকা পোস্টকে জানান, আমার ছেলে এই থিমে অভিনয় করেছে, প্রায় দুবছর ধরে একটি টিম এই মিনি সিনেমাটির জন্য শ্রম দিয়েছে। প্রবাসে বাচ্চারা দেশীয় কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করেছে এটা মা হিসেবে আমাদের জন্য গর্বের।

প্রতিটি চলচ্চিত্র পদর্শনীর আগে নির্মাতাদের অভিব্যক্তি জানতে তাদের মঞ্চে ডেকে নেন উপস্থাপক অভিষেক বড়ুয়া। ইভেন্ট কোঅর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেন বাওয়া সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড কমিউনিকেশন সেক্রেটারি সামা কামাল। তৌসিফ আক্কাস, ইয়াসিন মুন্না ও সামির আহমেদ থাকেন মেন্টর হিসেবে।

বিরতির পর মূল আকর্ষণ ভদ্দরনোক নাটক মঞ্চায়িত করা হয়। দেখা যায়, সেই চিরচেনা দেশীয় অবয়ব, হাসি-উচ্ছ্বাসের রসালো সংলাপ। শিল্পীদের অভিনয়ের দক্ষতায় হাসির খোরাক পায় দর্শকরা। দেখা মেলে মঞ্চ নাটক উপভোগের তৃপ্তি। মঞ্চে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলা হয় ফজর আলীর পারিবারিক গল্প। হঠাৎ বড়লোক বনে যাওয়া ফজর আলী কীভাবে পর-নারীর দিকে ঝোঁকে, নিজের বউকে তাচ্ছিল্য করে, ছোট বোনদের জন্য পয়সাওয়ালা স্বামী খোঁজে সর্বস্বান্ত হন, সেগুলো ফুটিয়ে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন শিল্পীরা। তাছাড়া তুলে ধরা হয় পারিবারিক খুনসুটি, চিরায়ত বাংলার রূপ ও আবেগঘন প্রেম। আরও রাখা হয় প্রতিটি দৃশ্যের জন্য পৃথক কস্টিউম, যাতে ফুটে উঠে বাংলাদেশ।

মূল ভূমিকায় অভিনয় করেন বিশ্বজিৎ বোস ও শর্মিষ্ঠা সাহা। দুজনেই নাটকের পরিচালনায়ও কাজ করেন। শর্মিষ্ঠা সাহা জানান, সফলভাবে মঞ্চায়িত করার অভিপ্রায়ে আমাদের পুরো টিম পাঁচ মাস ধরে কাজ করেছি। বাওয়ার নিয়মিত অভিনয় শিল্পীদের অংশগ্রহণ সেই সঙ্গে স্ক্রিপ্ট অনুসারে কোমলমতি শিশুদের নৃত্য বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠে। এই ইভেন্টটির কোঅর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করে বাওয়া কালচারাল সেক্রেটারি স্বর্ণা আফসার।

আয়োজন দুটিকে সফলতার মুখ দেখাতে সভাপতি এম এস এন শাহীদ রাজু ও সা. সম্পাদক আবু সাঈদ আনোয়ারের নেতৃত্বে বাওয়ার কার্যনির্বাহী টিম নেপথ্যে কাজ করে। সবমিলিয়ে একটি উৎসবমুখর শীতকালীন সন্ধ্যা উপভোগ করে পার্থের বাংলাদেশিরা।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement