২৭ জুলাই, ২০২৪, শনিবার

আগ্রাসী সাকিবের সমর্থনে উত্তাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

Advertisement

বাংলায় শেখ হাসিনা আর ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান। দ্যা কিং অব বেঙ্গল ক্রিকেট। অনিয়মের বিরুদ্ধে দুজনই সরব। একজন দেশ বাঁচাতে আরেকজন দেশের ক্রিকেট। যুগযুগে দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে অবদান রেখে গেছেন বাংলার প্রধানমন্ত্রী। তাইতো দেশে তৈরি হয়েছে সাকিব আল হাসানের মত জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি। সেই আগ্নেয়গিরি থেকে ফুটন্ত লাভা বের হতে শুরু করে ২০১৯ সালে। প্রথম মুখ খোলেন সাকিব। ক্রিকেটারদের বেতন ভাতা নিয়ে বিসিবি সামনে দাবি তোলেন ১১ দফা। সেসময় সাকিব বলেছিলেন, “কেউ যখন অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলবে না, তখন আমিই না হয় সবার পক্ষ থেকে কথা বলেছি”। তাদের আন্দোলনের মুখে ক্রিকেটারদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় বিসিবি। তবে সাকিবের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার, সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ১ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় বাংলার এই অলরাউন্ডারকে। যদিও কারণটা ছিলো ভিন্ন। এর পরে নানা বিতর্কে জড়িয়েছে সাকিব আল হাসান। আবার শক্ত হাতে সেগুলো সামলেছেনও।

এইতো মাস দুয়েক আগে বর্তমান ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। দেশের ক্রিকেট কেন দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে সেই সব যুক্তিও তুলে ধরেছিলেন বাংলার সম্রাট। ক্রিকেট বোর্ডে কর্মরত একাধিক সাবেক ক্রিকেটারদের কর্তব্য ও দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সাকিব আল হাসান। তার সাথে যুক্ত হয়েছিলেন ক্রিকেটর আরেক সম্রাট মাশরাফি বিন মর্তুজা। সে সময় তাদের এই অভিযোগ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোন মন্তব্য করেনি বিসিবি। সামিজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাকিব মাশরাফির এমন আগ্রাসী কর্মকাণ্ডে দেশের মানুষও ছিলেন তাদের পাশে।

পাকিস্তানের সুপার লিগ খেলতে যাননি সাকিব। দেশের ক্রিকেটেই মনোযোগ দিয়েছেন। তবে যুগযুগ ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে যে অনিয়ম চলে আসছে তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মিস্টার অলরাউন্ডার। শুক্রবার, মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দেশের সবচাইতে ক্ষমতাধর দলের বিপক্ষে সাকিব যা করেছে তা দেশের ক্রিকেটকে অন্যরকম এক রং দিবে বলে বিশ্বাস করেন সাধারণ ক্রিকেট ভক্ত থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ। তাইতো সাকিব আল হাসানকে মনে প্রাণে সমর্থন করে যাচ্ছেন তারা। তবে মাঠে এমন আচরণ না করাই উচিত ছিলো সাকিবের এমন কথাও বলছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনার পর থেকেই চলছে কাঁটাছেড়া। কেউ কেউ সাকিবের বিরুদ্ধে কথা বললেও বেশির ভাগ মানুষই বলছেন, নাট্যমঞ্চতে পরিনত হওয়া দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটকেই লাথি দিয়েছেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ক্রিকেট ভক্ত লিখেছেন, “সাকিবের এমন আচরণে সাকিব এখন কারো কাছে হিরো কারো কাছে ভিলেন। তবে একটা কথা কি বড় ভিলেন না হলে বড় হিরো হওয়া যায় না। সে সব সময় বাংলার ক্রিকেটের হিরো ছিল, যতদিন আছে ততদিন থাকবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এমন সাকিব থাকলে অন্যায়কারী পরের বার অন্যায় করতেও দুবার চিন্তা করবে।”

দেশের ক্রিকেটের সবচাইতে বড় ফ্যান গ্রুপে একজন সাধারণ ভক্ত লিখেছেন, যখন বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাদের মাটিতেই সাকিব প্রতিবাদ করলো, দলবল নিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলো, তখন কিন্তু আমি আপনি সবাই কাঁধেকাধ মিলিয়ে সাকিবের পাশেই ছিলাম। এখন যখন সাকিব একই কারণে (পক্ষপাত আম্পায়ারিং) প্রতিবাদ করলো, দেশের ক্রিকেট কে বাচাতে চাইলো (আগেও একবার চেষ্টা করেছিল) তখন আমরা দুই ভাগ হয়ে গেলাম। কেন ভাই?

সাকিবের এই আচরণে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন তার স্ত্রী  তিনি তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে লিখেছেন “গণমাধ্যমের মতো আমিও পুরো বিষয়টা খুব উপভোগ করছি। অবশেষে টিভিতে কিছু খবর পাওয়া গেলো। যারা আজকের (শুক্রবার) ঘটনার পরিষ্কার চিত্র বুঝতে পেরেছে, তাদের সমর্থন দিতে দেখা সত্যিই দারুণ লাগছে। অন্তত কেউ একজনের তো সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহসটা রয়েছে।”

তিনি আরও বলছেন, “দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এখানে মূল ইস্যুটি চাপা দিয়ে মিডিয়া শুধু তাঁর রাগ প্রকাশের বিষয়টি তুলে ধরেছে। এখানে আসল বিষয় হলো আম্পায়ারদের নেওয়া ক্রমাগত ভুল সিদ্ধান্তগুলো। শিরোনামগুলো সত্যিই দুঃখজনক। আমার কাছে মনে হয়, এটা তাঁর বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। যা কি না দীর্ঘসময় ধরে চলে আসছে, যাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁকে ভিলেন বানানো যায়। আপনি যদি ক্রিকেটপ্রেমী হয়ে থাকেন, তাহলে নিজের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সতর্ক হোন।”

এই ঘটনা নিয়ে বিসিবি আনুষ্ঠানিক কোন মন্তব্য না করলেও ঘটনার পরপরই সিসিডিয়েমের চেয়ারম্যান কথা বলেছিলেন গণমাধ্যমের সাথে সেখানে তিনি বলেছেন, ছোট বেলা থেকেই আমি ঢাকা আবাহনীর সাপোর্টর। আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচে বড়তি উত্তেজনা থাকবেই। তবে আন্তর্জাতিক সুপারস্টার হিসেবে সাকিব যা করেছে তা তার করা উচিত হয়নি। হয়তো তিনি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের পর মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি। তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের রিপোর্ট পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তাবে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে এই ঘটনার জন্য চার ম্যাচে বহিষ্কার করা হতে পারে সাকিব আল হাসানকে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement