২৭ জুলাই, ২০২৪, শনিবার

এনআইডি নিজেদের হাতে রাখা সমীচীন-ইসি

Advertisement

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন কার্যক্রম নিজেদের হাতে রাখার পক্ষেই যুক্তি দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এনআইডির দায়িত্ব অন্য কাউকে দেওয়া হলে এ সেবা বিঘ্নিত হবে এবং আইনি জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সেবা নির্বাচন কমিশনের কাছে রাখাই সমীচীন হবে।

গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে ওই চিঠি পাঠায় ইসি। ইসির উপসচিব (সংস্থাপন) মোহাম্মদ এনামুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিটির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকেও পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত ১৭ মে এনআইডির নিবন্ধন কার্যক্রম ইসি থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বরাবর চিঠি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ইসি সচিব ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবের কাছে এ বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। সেই চিঠির জবাব গতকাল দিল ইসি।

চিঠিতে ইসির মাধ্যমে ভোটার তালিকার সঙ্গে কিভাবে এনআইডি প্রস্তুত করা হলো, এর জন্য ইউএনডিপি ও আটটি দেশের সহায়তায় পুল ফান্ড গঠন, এনআইডি নিবন্ধন আইন ২০১০-এর মাধ্যমে ইসিকে এনআইডি প্রস্তুতের দায়িত্ব দেওয়া ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করা হয়। 

ভোটার তালিকা তৈরি করতে নির্বাচন কমিশনকে যে সাংবিধানিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা অন্য কোনো মন্ত্রণালয় বা সংস্থাকে দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এ ধরনের মহাকর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করা অন্য কোনো মন্ত্রণালয় বা সংস্থার পক্ষে সম্ভব নয়। এ ছাড়া ভোটার তালিকা বিধিমালা, ২০১২ মোতাবেক উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার রেজিস্ট্রেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা কোনো জনবল নির্বাচন কমিশনে নেই উল্লেখ করে চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্য কারিগরি জনবল ডাটা প্রসেসিং করে, অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে নিয়োজিত কর্মকর্তারা স্মার্ট কার্ড প্রিন্টিংয়ের কাজ করছেন। এসব কর্মকর্তা ২০০৮ সাল থেকে এ কাজের সঙ্গে জড়িত। এই দীর্ঘ ১২ বছরে নানা ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের দক্ষ ও পারদর্শী করে তোলা হয়েছে। তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা। জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত আলাদা কোনো জনবল না থাকায় এসব কার্যক্রম অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ের কাছে ন্যস্ত করা হলে মাঠ ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিশাল একটি জনবলের প্রয়োজন হবে, যা ব্যয়সাপেক্ষ। একই সঙ্গে তাঁরা দক্ষ ও পারদর্শী হয়ে না উঠলে জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হবে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে আলাদা করার লক্ষ্যে ২০০৯-১০ সালেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ লক্ষ্যে একটি সংস্থা কাজ শুরু করলেও ওপরে বর্ণিত কারণে তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। ফলে তা নির্বাচন কমিশনের কাছে থেকে যায়। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন ২০১০-এর মাধ্যমে এর কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement