২৭ জুলাই, ২০২৪, শনিবার

এসএসসি-এইচএসসি যদি নাও হয়, মূল্যায়নের প্রস্তুতি রয়েছে: ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান

Advertisement

বাংলাদেশে গত কয়েক মাস ধরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উর্ধমুখী হওয়ায় এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা আদৌ নেয়া সম্ভব হবে কিনা, এবং না নিতে পারলে কিভাবে তাদের মূল্যায়ন করা যাবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, ইতিমধ্যেই তারা এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নেবার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

এসএসসি পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে।

অন্যদিকে এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বিবিসিকে বলেছেন, কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করবে সময় পিছিয়ে হলেও পরীক্ষা নিতে, কিন্তু সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে নেহাত সম্ভব না হলে বিকল্প মূল্যায়ণের চিন্তাভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, “সবগুলো বোর্ড পরীক্ষা নেয়ার সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পাবলিক পরীক্ষায় সবগুলো বোর্ডের মধ্যে সমতা বিধানের প্রয়োজন রয়েছে।”

তিনি বলেছেন, শহরাঞ্চলে অনেক ক্ষেত্রেই অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও, দ্বীপাঞ্চল, হাওড় বা পাহাড়ী এলাকায় অনলাইন ক্লাসের সুযোগ সেভাবে ছিল না।

সেজন্য কর্তৃপক্ষ চায় পরিস্থিতি একটু অনুকূল হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে।

অধ্যাপক আহমেদ বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর এসএসসির ক্ষেত্রে ৬০ কর্মদিবস এবং এইচএসসির ক্ষেত্রে ৮৪টি কর্মদিবস করে ক্লাস নেবার পর পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যাতে পরীক্ষা নিতে পারি সেজন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। আমরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করবো পরীক্ষা নেয়ার। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে গেলে সেটা (পরীক্ষা গ্রহণ) যদি নাই পারি তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।”TY IMAGES

অধ্যাপক আহমেদ বলেছেন, পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া যায়, সে সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের কিছুটা প্রস্তুতি আগে থেকে রয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না নিয়ে জেএসসি এবং এসএসসি’র ফলাফলের ভিত্তিতে ভিন্ন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করে তাদের অটোপাস দেয়া হয়েছিল।

অধ্যাপক আহমেদ বলেন, “সেই সময়ে মূল্যায়ন সংক্রান্ত একটি কমিটি ও কাঠামো তৈরি আছেই। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে দূরে রাখা প্রথম কাজ।”

বাংলাদেশে এই মূহুর্তে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশের কাছাকাছি।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এর আগে বলেছেন, সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশে না নামলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাববে না সরকার।

মহামারির কারণে ২০২০ সালের জেএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়া কোন শ্রেণীতে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। সব শিক্ষার্থীকে ‘অটোপাস’ দিয়ে পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করা হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সকলেরই আক্রান্ত হবার ঝুঁকি রয়েছে, কিন্তু শিক্ষা খাতের স্থবির অবস্থা দূর করা জন্য এখন ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারপার্সন ডা. শারমিন ইয়াসমিন বলছেন, শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি কমানোর জন্য নানা ধরণের ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা বিবেচনা করা দরকার সরকারের।

তিনি বলেন’ “শিক্ষার্থীদের বয়স বিবেচনা করে তাদের ভ্যাকসিন দেয়ার মাধ্যমে ঝুঁকি কমানোসহ নানা ধরণের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। বাচ্চাদের বেলায় যদি কোভিড হয়েও থাকে, তাদের কোমরবিডিটি থাকলে ঝুঁকিটা বেশি থাকে।বির উৎস,

কিন্তু আরেকটু বেশি বয়স যাদের, ভ্যাকসিনের কাভারেজে ১২ বছরের বেশি বয়সের ছেলেমেয়েদের যদি নিয়ে আসা যায় তাহলে সংক্রমণ হলেও তাদের ঝুঁকি কম থাকবে।”

এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মনে করেন, দেশের অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মত এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টিও সরকারকে শক্ত বিবেচনায় নিতে হবে।

বাংলাদেশে এই মূহুর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি আগামী ৩০শে জুন পর্যন্ত ঘোষণা করা আছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে কওমি মাদ্রাসাসহ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

কিন্তু লকডাউন ১৫ই জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর কারণে ধারণা করা হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ছুটিও বাড়বে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement