করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৩৬ জন। আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল শনিবার জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩৯ জন। আর নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৩৭ জন।
২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৪৭৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয়েছে ১৮ হাজার ৭৪৯টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ১১২টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনায় এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৮ লাখ ২৬ হাজার ৯২২ জন। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩ হাজার ১১৮ জন।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এছাড়া চট্টগ্রামে ৮ জন, রাজশাহীতে ৬ জন, খুলনায় ৮ জন, রংপুরে ৪ জন, সিলেট ও ময়মনসিংহে ২ জন করে এবং বরিশালে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।
এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ আবার বেড়ে যায়। মার্চের প্রথমার্ধেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের ওপরে চলে যায়। বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৬ মার্চের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়, সেখানে ১৯ এপ্রিলের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ওই দিনই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়।
করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা এখনো বহাল। এ বিধিনিষেধে মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে গত মাসের মাঝামাঝিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ‘লকডাউন’ ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা ও যাতায়াতে বিপুল লোকসমাগম দেখে জনস্বাস্থ্যবিদেরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আশঙ্কা করেছিল, ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে। এদিকে ভারত সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে। কিছুদিন ধরে সারা দেশেও করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।