৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, মঙ্গলবার

কাল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন: ঘরের বাইরে যাওয়া মানা

Advertisement

করোনাভাইরাস মহামারির আগ্রাসী বিস্তার ঠেকাতে আগামীকাল ১ জুলাই থেকে সারা দেশে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হচ্ছে। তবে এই সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে সাত দিন পর আরও সাত দিন কঠোর লকডাউনের বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।

 লকডাউনে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও ব্যাটালিয়ান পুলিশ টহলে থাকবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ‘অথরিটি’ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষ যাতে কোনোভাবেই বের হতে না পারে তারা তা ‘মনিটর’ করবে। আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে বলেছি, টহল দেবে। কেউ কথা না শুনলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া তাদের কাজের মধ্যে থাকবে। 

এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। ঘরের বাইরে যাওয়া রোধে প্রয়োজনে এই সময়ে অসহায় গরিব ও কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ রয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এ জন্য প্রত্যেক উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে সর্বাত্মক লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও অর্থবছর শেষ হওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও হিসাব সংক্রান্ত কিছু অফিস সীমিত পরিসরে খোলা রাখা হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি জরুরি সেবায় কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কিছু শাখায় কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হলে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি শহরগুলোতে পৌর ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের মাধ্যমেও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহসিন জানান, লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সে জন্য সরকারের প্রস্তুতি থাকবে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আমাদের কিছু খাবারের সহযোগিতা আছে। প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়নভিত্তিক পরিকল্পনা সরকারের নেওয়া আছে। ফলে এই কয়দিনের জন্য যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, চায়ের দোকানদার বা ছোটখাটো হোটেলগুলো আছে সেগুলোর বিষয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা থাকবে। 

লকডাউনের সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ব্যতীত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবে না। লকডাউনে জনসাধারণের জরুরি চলাচলের জন্য বিশেষ ‘মুভমেন্ট পাস’ নেওয়ার সুযোগ বন্ধ থাকবে। তবে গণমাধ্যম এর আওতাবহির্ভূত থাকবে। 

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, জরুরি সেবামূলক কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কিছু শাখার কার্যক্রম চলবে। এসব প্রতিষ্ঠান ছাড়া লকডাউনে সবকিছু বন্ধ থাকবে। সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে আগের চেয়ে আরও বেশি কঠোরতা দেখাবে সরকার।

লকডাউন চলমান থাকায় দরিদ্র, দুস্থ, অসচ্ছল ও কর্মহীন জনগোষ্ঠীর মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে দেশের ৬৪টি জেলার অনুকূলে ২৩ কোটি ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গত রোববার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বরাদ্দের শর্তানুযায়ী সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা বরাদ্দকৃত অর্থ ইউনিয়নওয়ারি উপ-বরাদ্দ প্রদান করবেন। ৩৩৩ নম্বরে ফোন করলে মানবিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের এই বরাদ্দ থেকে খাদ্য সহায়তা যেমন চাল, ডাল, তেল, লবণ ও আলু ইত্যাদি প্রদান করতে হবে বলে বরাদ্দপত্রে উল্লেখ করা হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হলে অসহায়দের জন্য অর্থ বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement