আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত সম্মানজনক কিডস্ক্রিন এওয়ার্ডসের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে বাংলাদেশের শিশুদের জন্য নির্মিত জনপ্রিয় শিশুতোষ অনুষ্ঠান সিসিমপুর। সিসিমপুর ‘বেস্ট মিক্সড মিডিয়া সিরিজ’ ক্যাটাগরিতে আরও দুটি বিশ^খ্যাত শিশুতোষ সিরিজের সাথে এই মনোনয়ন পেয়েছে।
মনোনয়নপ্রাপ্ত সিসিমপুরের ১৩তম সিজনের এপিসোডটিতে শিশুদের খেলার মাধ্যমে শেখা, অন্যকে সহযোগিতা করা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে যে আনন্দলাভ হয়, এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা শিশুর বিকাশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। খেলার পাশাপাশি সিজনের প্রতিটি পর্বে সহযোগিতা, সহমর্মিতা, বিজ্ঞান, প্রকৃতি, ভাষা, গণিত ইত্যাদি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। কিডস্ক্রিন এওয়ার্ড বিশ^জুড়ে শিশু ও পরিবারদের নিয়ে নির্মিত সেরা সিরিজ, এনিমেটেড ফিল্ম, লাইভ একশন প্রোগ্রামসহ নানা ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে পুরস্কৃত করে থাকে। আসছে ফেব্রুয়ারিতে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২২ সালের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
সম্মানজনক কিডস্ক্রিন এওয়ার্ডে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করে সিসিমপুরের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, নিঃসন্দেহে এটি ভীষণ আনন্দের সংবাদ। কিডস্ক্রিন এওয়ার্ড বিশ্বব্যাপী শিশুদের অনুষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক একটি পুরস্কার। বিশ্বের সেরা সেরা সব শিশুতোষ অনুষ্ঠানের সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের সিসিমপুর ‘সেরা তিন’এ স্থান পেয়েছে। এটি অত্যন্ত গর্বের বিষয় যা আমাদের ভবিষ্যতের কাজকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করবে।
উল্লেখ্য ২০১০ সালে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস ট্রাস্ট পরিচালিত জরিপেও সিসিমপুর শিশুতোষ অনুষ্ঠান হিসেবে সেরা এবং সামগ্রিকভাবে তৃতীয় জনপ্রিয় অনুষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছিল। ২০০৭ সালে পরিচালিত এসিপিআরের একটি দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু সিসিমপুর অনুষ্ঠানটি নিয়মিত দেখে, তারা তাদের চাইতে এক বছরের বড় শিশু, যারা সিসিমপুর দেখে না, তাদের চেয়ে ভাষা ও বর্ণ, গণিত এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিষয়ে বেশি দক্ষতা প্রদর্শন করেছে।
২০০৫ সাল থেকে প্রাক-প্রাথমিক শিশু বিকাশ কার্যক্রমের আওতায় ‘সর্বত্র শিশুরা হয়ে উঠুক আরও সম্পন্ন, আরও সবল এবং আরও সদয়’ এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সিসেমি স্ট্রিট-এর বাংলাদেশি সংস্করণ ‘সিসিমপুর’। সিসিমপুর অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারসহ নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়।
সিসেমি ওয়ার্কশপ “সিসেমি ওয়ার্কশপ” একটি অলাভজনক শিক্ষামূলক সংগঠন যার পেছনে রয়েছে “সিসেমি স্ট্রিট” নামের অনুষ্ঠান যা টেলিভিশনকে শক্তিশালী শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ১৯৬৯ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সিসেমি ওয়ার্কশপ এমন একটি উদ্ভাবনী মাধ্যম যা শিশুদেরকে অনেক বেশি সম্পন্ন, সবল ও সদয় হয়ে উঠতে কাজ করে যাচ্ছে।
সংস্থাটি ১৫০টিরও বেশি দেশে শিশুদের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও জনসেবামূলক কর্মসূচি বা প্রকল্প চালু রেখেছে। এই সকল উদ্যোগ বা প্রকল্প বিভিন্ন অঞ্চল বা জনগোষ্ঠীর চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ (এসডব্লিউবি), সিসেমি ওয়ার্কশপ-এর একটি শাখা অফিস, যা সিসিমপুর নামে টেলিভিশন অনুষ্ঠান তৈরি করে থাকে। এটি বিশ্ব-বিখ্যাত টেলিভিশন প্রোগ্রাম সিসেমি স্ট্রিট-এর বাংলাদেশি সংস্করণ। বাংলাদেশি শিশুদের শিক্ষাগ্রহণকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হচ্ছে।