পাবনার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থী, এরা সবাই মেধাবী ও বিচক্ষণ। নিজ নিজ এলাকায় পরিবারের নামযশও আছে। এই মেধাবীরাই ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল থেকে অভিনব কায়দায় ছিনতাই করার পরিকল্পনা নেয়।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী পাবনা শহরের বিভিন্ন বাসায় ভিনভিন্ন পরিচয়ে গিয়ে ছিনতাই করতেন। এই শিক্ষার্থী ছিনতাই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দীঘা গ্রামের মৃত জমশের আলীর ছেলে মো. লিখন হাসান (২৪)। লিখন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার মিয়াপুর সুতাহাটি গ্রামের আব্দুল্লাহিল কাফির ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল বাকী অনিক (২২)। সে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং অপরজন পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুরের ভাদুরিয়া ডাংগী গ্রামের মো. হাতেম আলী মণ্ডলের ছেলে মো. আবুল বাশার (২১)। বাশার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ফোকাস কোচিংয়ে অধ্যায়নরত।
মাসুদ আলম জানান, গত ১০ জানুয়ারি এই চক্র পাবনা শহরের একটি বাসায় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টটিভ পরিচয় দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে। বাসার সদস্যরা তাদের আচরণে সন্দেহজনক মনে করে ভিডিও ধারণ করতে গেলে তারা পালিয়ে যায়।
পরের দিন ১১ জানুয়ারি দুপুরে পাবনার বড় বাজার এলাকায় কোচিং সেন্টারের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে বাসায় ঢুকে গৃহবধুর হাত-পা বেঁধে ৭২ হাজার টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়।
এসব ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য তথ্য প্রযুক্তি ও সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ ৩১ হাজার টাকা, ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও আসামিদের ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, ভারতীয় টিভি-শো ক্রাইম পেট্রোল দেখে এসব অপরাধের কৌশল শিখেছে তারা। তারা অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও আইটি বিষয়ে অভিজ্ঞ। তারা আরও অনেক বাসায় একই কায়দায় ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল।
কিভাবে এবং কেন এই অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে গেল সেটা জানতে তাদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
একই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সদর উপজেলার ভাড়ারায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ভাবীকে গুলি করে গুরুতর আহত করার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ফায়ারিং পিন ও ট্রিগারসহ একনালা বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ভাড়ারা ইউনিয়নের মধ্য জাতুয়া গ্রামের মৃত ভেগু সর্দারের ছেলে মো. ইয়াছিন সর্দার (৫০) এবং আওরঙ্গবাদ পূর্বপাড়ার মৃত রহিম শেখের ছেলে মো. আওকাত আলী শেখ (৫৫)।