আমাদের দেশের অনেক চাষিরাই ছাদ বাগান করে থাকেন। তবে অনেকেই সফলতা পেয়ে থাকেন আবার অনেকে ব্যর্থ হন। আর এর কারণ হলো সঠিক ভাবে চাষ পদ্ধতি ও জমি তৈরি পদ্ধতি সম্পর্কে না জানা। আর সঠিকভাবে মাটি তৈরি করতে পারলে গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়। যার ফলে ফলনও ভালো হয়।
বালি বা এঁটেল মাটি একত্রে মেশানো:
যদি এঁটেল মাটি (শক্ত মাটি) হয়, তাহলে তাতে বালি মাটি মেশাতে হবে। আর যদি মাটি বালি হয়, তাতে এঁটেল মাটি মেশাতে হবে। অর্থাৎ যে কোনো মাটি দো-আঁশ মাটিতে রূপান্তর করতে হবে। যখন মাটি ঝুর ঝুরে হবে তখনই বুঝবেন তা দো-আঁশ মাটি হয়েছে।
মাটিতে জৈব সার মেশানো:
এঁটেল বা বালি মাটি হোক, উভয়ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে জৈব সার মেশাতে হবে। তবে স্বাভাবিক মাটির সঙ্গে কমপক্ষে চারভাগের একভাগ জৈবসার মেশাতে হবে। যার ফলে মাটিতে অবস্থিত জীবাণু সক্রিয় থাকবে।
যদি এঁটেল বা বালি মাটি হয় তাহলে পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। তবে মাটির অর্ধেক পরিমাণ হলে ভালো হয়। জৈব সার হিসেবে সবচেয়ে ভালো ভার্মিকম্পোস্ট। এমনকি বাড়িতে তৈরি আবর্জনা পচা সার বা পচা গোবর সারও দেয়া যায়।
রাসায়নিক সার মেশানো:
ছাদের জন্য অর্ধেক ড্রাম এবং মাটির জন্য ২ ফুট বাই ২ ফুট ১.৫ ফুট আকারের গর্তে অর্ধেক ড্রামে প্রায় ১২০-১৫০ কেজি (৩-৪ বস্তা প্রায়) মাটি ধরে। তবে উভয়ক্ষেত্রে মাটির সঙ্গে জৈব সার ৩০-৫০ কেজি, টিএসপি ১২০-১৫০ গ্রাম, পটাশ ৮০-১০০ গ্রাম (২-৩ মুঠ প্রায়), জিপসাম ৪০-৫০ গ্রাম (১.০-১.৫ মুঠ প্রায়), ১০-১৫ গ্রাম (১.৫-২.০ চা চামচ প্রায়) করে বোরণ ও দস্তা সার ভালোভাবে মিশিয়ে ১৫ দিন ঢেকে রাখবেন। ১৫ দিন পর পুনরায় মাটি ভালোভাবে মিশিয়ে কিছুক্ষণ খোলা রেখে চারা রোপণ করবেন।
মাটি শোধন করা :
মাটি প্রস্তুতের সময় শোধনের কাজটি সেরে নেয়া যেতে পারে। আর এ জন্য উপরোক্ত পরিমাণ মাটির সঙ্গে ১০ গ্রাম (১.০-১.৫ চা চামচ) হারে দানাদার কীটনাশক এবং কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক মিশিয়ে দেয়া যেতে পারে। এতে করে কৃমি এবং ছত্রাক দমন করা সম্ভব হবে।
আবার দানাদার কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব কীটনাশক বায়োডার্মা সলিড প্রয়োগ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রতি কেজি ভার্মিকম্পোস্টের সঙ্গে ১-২ গ্রাম হারে বায়োডার্মা মিশিয়ে কমপক্ষে ১৫ দিন রেখে দিতে হবে। ১৫ দিন পর সার মিশ্রিত মাটির সঙ্গে বায়োডার্মা মিশ্রিত ভার্মিকম্পোস্ট মেশাতে হবে।
তবে ছাদ বাগানের টবের মাটি নিয়ম মেনে তৈরি করতে পারলে আপনি ভালো ফলন পাবেন।