১৯ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

টিসিবির পণ্য বিক্রির ৯ ঘণ্টা আগেই দীর্ঘ লাইন

Advertisement

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস। রমজানকে ঘিরে নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে। বিপাকে পড়েছেন স্বল্প-আয়ের মানুষ। এ অবস্থায় সাশ্রয়ী মূল্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি)  পণ্য পেতে রাত ১টা থেকেই সরবরাহ গুদামের সামনে ভিড় করতে দেখা গেছে শত শত নারী ও পুরুষকে।

রবিবার মধ্যরাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬০ নম্বর ওয়ার্ডে জনতাবাগ কাউন্সিলরের বাসার নিচে টিসিবির একটি পণ্য সরবরাহ পয়েন্টে এমন চিত্র দেখা যায়।

ওই ওয়ার্ডে টিসিবির ডিলার এ এইচ এন্টারপ্রাইজের পণ্য আসে শনিবার রাত সাড়ে ৮টায়। পরদিন সকাল ৯/১০টায় পণ্য বিক্রি করা হবে। সেটা জেনেও ৮-৯ ঘণ্টা আগেই কেউ রাত ১টা, কেউ রাত ৩টা কেউ আবার সেহরী খেয়েই লাইনে দাড়িয়ে যান ওই এলাকার ফ্যামিলি কার্ডধারী ক্রেতা নারী-পুরুষ।

ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে বিশৃঙ্খলার কারণে টিসিবির সরবরাহকারীর মাধ্যমে ফ্যামিলি কার্ড দিয়ে পণ্য বিক্রি করছে সরকার। ফ্যামিলি কার্ড নিয়েও সরবরাহকারীর দোকানের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকে পণ্য না নিয়ে খালি হাতে বাসায় ফিরে যান।

রবিবার রাত ১টায় লাইনে দাড়ানো মাহবুব, নজরুল ইসলাম, মোসলেম, সাহাজান গণমাধ্যমকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। টিসিবির পণ্য স্বল্পমূল্যে পাওয়া যায়। সে কারণে টিসিবির পণ্য কিনতে আসছি। শনিবার সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উত্তপ্ত রোদের মধ্যে লাইনে দাড়িয়েও পণ্য নিয়ে বাসায় যেতে পারিনি। সে কারণে আজ রোববার রাত ১টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি।

মুক্তা, মোরশেদা, হোসনে আরা, লিপিসহ একাধিক নারী একই কথা গণমাধ্যমকে বললেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত পণ্য বিক্রির দিনে ২-৩ দিন ধরে ৬-৭ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও পণ্য ক্রয় করতে না পেরে খালি হাতে বাসায় যেতে হয়েছে। 

তারা আরও বলেন, ওয়ার্ডের ফ্যামিলি কার্ডধারী লোকজন বেশি। ডিলাররা পণ্য বিক্রির সময় একটি বুথের মাধ্যমে টাকা নেন, কার্ডে স্বাক্ষর দেন, পণ্য দেন। সে কারণে ভোগান্তি হয়। মানুষের সমাগম অনুযায়ী পণ্য বিক্রির বুথের সংখ্যা বাড়ানো হলে ভোগান্তি কমে যেতো। মানুষের ভোগান্তি দেখেও ডিলার এবং কাউন্সিলর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, এখানে স্বজনপ্রীতিই চলে বেশি। কাউন্সিলরের লোকজন লাইনে না দাঁড়িয়ে যখন খুশী তখন এসে পণ্য নিয়ে যান। আর যারা মধ্যরাতে, ভোররাতে ৭-৮ ঘণ্টা আগে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা শুরুতে যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানেই দাড়িয়ে থাকেন। পণ্য ক্রয় ভাগ্যে জোটে না।

৬০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন মজুমদার কিছুটা অসুস্থ থাকার কারণে তার ছোট ভাই নুরুল ইসলাম মজুমদারই ওয়ার্ডের সব কাজ করে আসছেন দীঘদিন যাবত। নুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বিগত দিনে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে মানুষের কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে শনিবার তা হয়নি। আশা করি রোববার পণ্য বিক্রিতেও মানুষের কোনো ভোগান্তি হবে না।

টিসিবির ডিলার এ এইচ এন্টারপ্রাইজের মালিক ফাহাদগণমাধ্যমকে বলেন, এখানে ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের লোকজন পণ্য বিক্রিতে আমাদেরকে সহায়তা করেন। তারা যেভাবে বলে সেভাবেই আমি পণ্য বিক্রি করি। সেক্ষেত্রে মানুষের ভোগান্তি হলে আমার কি করার থাকে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement