ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জানেন না বাংলাদেশে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন কাজ। শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাই বিশ্বের বুক বাংলার ইজ্জত বৃদ্ধি করে চলেছে বহুগুণে। ইউরোপ থেকে আমেরিকা কোথায় নেই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে দিন যতই গড়াচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটি পরিণত হচ্ছে ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া।
তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু নিষ্ঠাবান শিক্ষকদের জন্য দুর্নীতিবাজরা কিছুটা হলেও ভয়ে থাকেন আর সেই কারণের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ডিরেক্টর রেসিডেনসিয়াল সেমিস্টারে প্রধানকে কোন রকম নোটিশ বা অপরাধ ছাড়াই ইউনিভার্সিটি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির ভিসি ভিনসেন্ট চ্যাং। রেহান আহমেদের অপরাধ তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্নীতির গোমর ধরে ফেলেছেন। সবার উপরে বসে থাকা ভিসিই নাকি এসব দুর্নীতির সাথে সরাসরি জড়িত।
এসব বিষয় নিয়ে রেহান আহমেদ কেটিভির কাছে অভিযোগ করে জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম দুর্নীতি চলছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরেশন্স ডিপার্টমেন্ট চালিয়েছি এক সময়। তখন আমি অনেক অনিয়ম ধরেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে সেজন্য সেরা কর্মীর খেতাবও প্রদান করছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন।
তিনি বলেন, আমি প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা লুটে খাওয়া কিছু স্বর্থ লোভি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষেকে প্রদান করেছি কিছুদিন আগে। আমি ইমেলে পাঠিয়েছি সেই ইমেলটাও খুলে দেখেননি ভিসি। আমি তাদের কাছে হার্ড কপি প্রদান করেছি। তারা সেটা আমার থেকে নেওয়ার পর অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে, উল্টো আমাকে টার্মিনেট করতে চাইছে। আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমাকে আজ (বুধবার) ইউনিভার্সিটিতে ডেকে এনে জোর পূর্বক রিজাইন দেওয়ানোর চেষ্টা করছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি “ভিনসেন্ট চ্যাং” আমি রিজাইন দেয়নি এবং দিবও না। সমঝোতা করার চেষ্টাও করা হয়েছে, কিন্তু আমি করিনি বলেছি যদি আমাকে টার্মিনেট করাই হয় তাহলে আমাকে যেন পোস্ট অফিসের মাধ্যমে চিটি পাঠানো হয়। কোন অপরাধ না করেই আমি এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষ্ঠাবান কর্মীরা কেনো শান্তি পাবেন?
তিনি কেটিভিকে বলেন, প্রয়োজন বোঝে আমি এর বিচার চাইবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে, হাইকোর্টে যাবো, ইউসিজির কাছে অভিযোগ করবো। আমার জীবন থাকতে আমাদের প্রাণের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হতে দেবো না।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যামনালাইজেশন করার নামে দেশের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে চড়া টিউশন ফি নিয়ে বিদেশী ছাত্র ছাত্রীদের শতভাগ টিউশন ফি ফ্রি করে দেওয়া হচ্ছে। তাদের থাকা খাওয়া ফ্রি করে দেওয়া হচ্ছে কিন্তু অন্য দিকে আমাদের দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি এর চাপে অনেক সময় পড়াশোনাই ছেড়ে দিচ্ছে। সেই সাথে দেশের কর্মীদের বদ দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চড়া বেতনে যুক্ত করা হচ্ছে বিদেশী কর্মীদের।
এইসব অনিয়মের প্রতিকারের জন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। এবং এ নিয়ে ভুক্তোভুগিরা ফেসবুক গ্রুপে লিখেছেন, ” ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জুলুমবাজ ভিসির নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চাকরি ছিনিয়ে নেওয়ার বিচার চাই- অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরণ অনশন ” প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত একটি প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সাভার ক্যাম্পাসের সাবেক সুপার ইন্টেনডেন্ট রেহান আহমেদ এবং সংশ্লিষ্ট টিউটরগণ।