টাকা পয়সার ব্যাপারে কোন চুক্তিই হয়নি পারটেক্স সাথে। আমার প্রয়োজন ছিলো মাঠে নেমে নিজেকে নতুন করে ফিরে পাওয়া। প্রথম দিকে কষ্ট হয়েছে, তবে সব মিলিয়ে লিগে ১০ উইকেট পেয়েছি। ১৪০ বা এর কাছাকাছি গতিতে বল করেছি, এটাই আমার জন্য অনেক বড় অর্জন। পারটেক্সকে ধন্যবাদ আমাকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। যেহেতু তাদের সাথে টাকা পয়সার ব্যাপারে কোন চুক্তি হয়নি, সেহেতু তারা আমাকে টাকা পয়সা না দিলেও কিছু করার নেই আমার। তবে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে যদি তারা যদি আমাকে সম্মান দেখান , তবে সেটাই হবে আমার জন্য বড় পাওয়া। সেই সাথে এই করোনায় তাদের থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে কিছুটা হলেও সাংসারিক প্রয়োজনগুলো মেটাতে পারবো। মায়ের চিকিৎসার জন্যেও কিছু খরচ করতে পারবো। ফোনের ওপাড় থেকে এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করছিলেন শাহাদত হোসেন রাজিব, বলছিলেন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করতে চান তিনি। অপেক্ষায় আছেন শুধুই একটি সুযোগের।
একবার ভেবে দেখুন তো, আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে একপাশ থেকে শাহাদত হোসেন রাজিব, আর অন্যপাশ থেকে বল করছেন তাসকিন আহমেদ। দুজনের উচ্চতা, বলের গতি ও মাপা ডেলিভারিতে রীতিমত কাঁপছে প্রতিপক্ষের ব্যাটাররা। এই ব্যাপারটা আসলেই দারুণ, তাই না? সে যাই হোক, তাসকিন তার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন, ফিরেছেন জাতীয় দলেও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার গতির ভেলকিও দেখিয়েছেন।
কিন্তু বাংলাদেশ দলের আরেক পেসার চেষ্টা করছেন নিজের স্বাভাবিক রূপে ফেরার। নানা বিতর্কে সবধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ থাকার পরও এবারের প্রিমিয়ার লিগে মাঠে নেমে কিছুটা হলেও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে পেরেছেন তিনি। লিগ শুরুর আগে কোন দলেই যায়গা হচ্ছিলো না তার তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই শেষ মূহুর্তে কোন রকম পারিশ্রমিক ছাড়াই নাম লিখিয়েছিলেন পারটেক্স গ্রুপে। পুরো টুর্নামেন্টে তার দল একটি ম্যাচেও জেতেনি। কিন্তু রাজিব ছন্দে ফিরেছেন ঠিকই, যতগুলো ম্যাচ খেলেছেন সবগুলোতে চেষ্টা করেছেন গতির ঝড় তুলতে।
তার দাবি তিনি প্রতিটি ম্যাচেই ১৪০ কিমি গতি বা তার কাছাকাছি গতিতেই বল করেছেন। উইকেট পেয়েছেন দশটি। সব বিতর্ক থেকে বেরিয়ে এসে ক্রিকেটে ফেরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার টার্গেট যা ছিলো আপাতত আমি সেটা করতে পেরেছি। নিজেকে ছন্দে ফিরিয়েছি। এখন রয়েছি শুধুই সুযোগের অপেক্ষায় বিসিবির ছায়া জাতীয় দলে যদি সুযোগ আসে আর সেখানে যদি আমি প্র্যাকটিস করতে পারি তাহলে আমি বিশ্বাস করি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরাটা শুধুই সময়ের ব্যাপার হবে আমার জন্য।
মুঠো ফোনে তার লক্ষ্যের কথা বলতে বলতে কিছুটা আবেগি হয়ে পড়েছিলেন রাজিব। তবে এ প্রান্ত থেকে বোঝা যাচ্ছিলো রাজিব আর আগের রাজিব নেই, নিজেকে সামলাতে শিখেছেন। শিখেছেন ভেবে চিন্তে কথা বলতেও।
তাই বাস্তবতাকে সামনে এনে তার কাছে জানতে চাওয়া , কোন রকম টাকা পয়সা ছাড়া পারটেক্সের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে যে খেললেন তাতে কী সাংসারিক চাহিদা বা ব্যক্তিগত আর্থিক সমস্যার সমাধান হলো! নাকি হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে রাজিবের পরিষ্কার উত্তর, পারটেক্স আমাকে মাঠে নেমে খেলার সুযোগ দিয়েছে এটাই অনেক বড় কিছু। তবে তারা যদি আমাকে সম্মানী দেয়, তাহলে সেটা আমার জীবন যাপনের জন্য অনেক কাজে আসবে। আসলে আমিতো আর তাদের সাথে কোন চুক্তি করিনি , তাই টাকা পয়সার ব্যপারটা তাদের উপরই ছেড়ে দিয়েছি।
প্রায় ২০ মিনিটের ফোন আলাপে রাজিব প্রতিটি কথা ইঙ্গিত দিচ্ছে জাতীয় দলে ফিরতে আরও কঠোর পরিশ্রম করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। এখন দেখার বিষয় সামনে জাতীয় দলের পাইপ লাইনে তাকে বিবেচনা করে ছায়া জাতীয় দলে রাজিবকে রাখা হয় কি না।