পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনা জেলায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচ লাখে। এমন অবস্থায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন পানিবন্দিদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে।
পাশাপশি বিভিন্ন সংগঠন জনপ্রতিনিধিরাও দিচ্ছে ত্রাণ সহায়তা। সরকারী হিসাব অনুয়ায়ী বন্যার পানিতে ডুবে ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ৫ জনের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে কলমাকান্দায় ডায়রিয়ায় মারা গেছেন একজন।
এদিকে কলমাকন্দায় উব্দাখালি নদীর পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে দুপুর পর্যন্ত নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত। খালিয়াজুরীতে ধনু নদীর পানি রয়েছে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপরে। এদিকে জারিয়া পয়েন্টে কংশ নদীর পানি নেমেছে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নিচে। দূর্গাপুরে সোমশ্বরীর নদীর পানিও বিপৎসীমার ৩৬১ সেন্টিমিটার নিচে নেমেছে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, জেলার ১০ উপজেলাই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারমধ্যে বেশি খারাপ হয়েছে ৭৭টি ইউনিয়ন। সাড়ে পাঁচলাখ মানুষ পানিবন্দি। মোট ৩৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষ। ২০ হাজার গাবাদি পশু। পানিবন্দি মানুষদের জন্য ৯০টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।
জেলা প্রশাসন থেকে ৫৯৩ মেট্রিক টন চাল এবং ৩৩ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। ৬২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। কোন অসুবিধা হবে না। যেখানেই খবর পাচ্ছি সেখানেই ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ১০ উপজেলার সবকটিতেই আমি নিজে গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছি। বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, ব্যক্তি পর্যায়, স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরাও ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন। আশা করছি কোন মানুষ আর কষ্ট করবে না। এলাকায় পানিবন্দি মানুষদের কাছে গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে আমাদের মেডিকেল টিমগুলো। পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতেও পর্যাপ্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দিয়ে যাচ্ছেন ত্রাণ সহায়তা। কেথাও কেউ ত্রাণ পাচ্ছে না জানালেই সেখানে পাঠানো হচ্ছে ত্রাণ। আমাদের সকল সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তবে পানি সরতে হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি। তিনি জানান, এ পর্যন্ত আমাদের কাছে খবর এসেছে চারজন পানিতে ডুবে মারা গেছে।