২৭ জুলাই, ২০২৪, শনিবার

পদ্মা সেতু ও মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর থেকেই টোল আদায়

Advertisement

প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে পদ্মা সেতু ও ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে পদ্মা সেতু চালুর পর দিন থেকেই টোল আদায়ের। আগামী বছরের জুনে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দিতে সব ধরনের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, গত ১ জুলাই থেকে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যান চলাচলের জন্য টোল নেওয়া হবে। পরে এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায়ের সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো নির্মাণে দেরি হওয়ায় ও বিভিন্ন অসুবিধার কারণে ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়।

এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচলের জন্য একটি পয়েন্টে টোল দিতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে অবশ্য টোল দিতে হচ্ছে ধলেশ্বরী সেতুতে। এ নিয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব (টোল অ্যান্ড এক্সেল শাখা) ফাহমিদা হক খান বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় করা হবে।

এজন্য এক্সপ্রেসওয়েতে আইটিএস (ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম) স্থাপন করা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম বা আইটিএসের আওতায় আসছে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায় করা হবে এ সিস্টেমের আওতায়। এটি একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা। তাতে আইটিএস ব্যবস্থায় রিয়েল-টাইম, ট্রাফিক ও ভ্রমণের তথ্য নিয়ন্ত্রিত থাকে। ।

এ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোলের অর্থ কেটে নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে গাড়ির সামনের উইন্ড স্ক্রিনে একটি স্টিকার থাকবে। যখন গাড়িটি নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে যাবে তখন স্ক্যান করে গাড়ি সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট থেকে টোলের অর্থ আদায় করা হবে। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে তিনটি সেতু রয়েছে। এসব সেতুর টোলও সমন্বিতভাবে আদায় হবে। এই এক্সপ্রেসওয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, তা পদ্মা সেতুর সঙ্গে যুক্ত হবে। এখন পদ্মা সেতু নির্মাণাধীন।

গত ২৩ আগস্ট পদ্মা সেতুর সর্বশেষ রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে। সেতুটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে আগামী বছরের জুনে। কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সব ধরনের কাজ এগিয়েছে ৮৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সেতুটির মূল কাজ হয়েছে ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং নদীশাসনের কাজ হয়েছে ৮৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনও (কেইসি) পদ্মা সেতুতে টোল আদায় কাজসহ আনুষঙ্গিক কাজ করবে। এ কোম্পানি বর্তমানে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ তদারকি করছে।

এ নিয়ে সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির টোল হারের প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। তা গত ২৪ জুন সেতু কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় অনুমোদন করা হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেছে প্রস্তাবটি। টোল হারের বিষয়টি সেতু কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় চূড়ান্ত হলে তা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে সেতুতে যান চলাচল শুরুর পরই টোল আদায় করা হবে।
টোল হারের প্রস্তাবনা থেকে জানা যায়, মোটরসাইকেলে টোল প্রস্তাব করা হয়েছে ১০০ টাকা, প্রাইভেটকার ও সাধারণ জিপে টোল প্রস্তাব করা হয়েছে ৭৫০ টাকা, প্রাডো, নিশান জিপ ও পিকআপে টোল হার ধরা হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা, মাইক্রোবাসে টোল ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ টাকা। ছোট বাসে ১হাজার ৪০০ টাকা, মাঝারি বাসে ২ হাজার টাকা ও বড় বাসে ২ হাজার ৪০০ টাকা টোল প্রস্তাব করা হয়েছে, ছোট ট্রাকে (পাঁচ টনের কম) ১ হাজার ৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে (পাঁচ থেকে আট টন) ২ হাজার ১০০ টাকা ও বড় ট্রাকে (আট টনের বেশি) ২ হাজার ৮০০ টাকা ও কাভার্ডভ্যানে টোল প্রস্তাব করা হয়েছে ৫ হাজার ৫০০ টাকা।

এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলের জন্য সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের প্রাথমিক টোল প্রস্তাবনায় ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পুরো ৫৫ কিলোমিটার পথ চলাচলে প্রতি মিনিবাস থেকে ৫৫৫ টাকা টোল আদায়ের প্রস্তাব করা হয়, পরবর্তীতে তা কমিয়ে ২৭২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়িতে টোল ২৭৮ টাকা থেকে কমিয়ে ১৩৬ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যাত্রীবাহী বড় বাসের ক্ষেত্রে টোল আগে প্রস্তাব করা হয়েছিল ৯৯৯ টাকা পরে প্রস্তাব করা হয়েছে ৪৯০ টাকা।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement