২৭ জুলাই, ২০২৪, শনিবার

মহামারীর প্রণোদনা নীতি অব্যাহত চায় বিজিএমইএ

Advertisement

কোভিড মহামারীতে দেওয়া প্রণোদনার নীতি সুবিধাগুলো অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে বৈঠকে সংগঠনের নেতারা এগুলোর সঙ্গে নতুন কিছু দাবিও তুলেছেন।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের নেত্বত্বে একটি প্রতিনিধি দল বৈঠকে একগুচ্ছ লিখিত দাবি তুলে ধরে।

লিখিত প্রস্তাবে সংগঠনটি বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গে টেনে বৈদেশিক বাণিজ্য লেনদেনে বৈদেশিক মুদ্রাবিধি শিথিল করে ২০২১ সালের মার্চে দেওয়া সুবিধার মেয়াদ ২০২২ সালের পুরোটা সময় জুড়ে চেয়েছে।

বৈঠকের বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘‘বর্তমান গভর্নর ফজলে কবির আগামী মাসে বিদায় নিচ্ছেন। তার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে এসেছি।

‘‘বিদ্যমান আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে তৈরি পোশাক খাতের জন্য দেওয়া নীতিসুবিধাগুলোর মেয়াদ ২০২২ সালের পুরোটা সময়ের জন্য এবং আগামী ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ঋণ খেলাপি না করার বিষয়টি নমনীয়ভাবে দেখার প্রত্যাশা জানিয়েছি।’’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিজিএমইএর কিছু দাবির মত অন্যান্য ব্যাবসায়িক সংগঠন, যেমন এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকেও একই কথা বলেছেন তারা। আর কিছু বিষয় শুধু বাংলদেশ ব্যাংকের একার সঙ্গে সংশ্লিষ্ঠ নয়।’

‘‘তাদের দাবির বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হবে, ব্যাংকারদের মতামত নিয়েই পরবর্তী যৌক্তিক করণীয় নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’’

কোভিড-১৯ মহামারীতে লকডাউনের সময় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রণোদনা ঋণ প্যাকেজের পাশাপাশি অনেক নীতি সুবিধা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

নীতিসুবিধাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, রপ্তানি আয় ১২০ দিনের পরিবর্তে ২১০ দিনের মধ্যে আনা, ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির দায় পরিশোধে ১৮০ দিন অতিরিক্ত সময় দেওয়া, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে নেওয়া ঋণের মেয়াদ ৯০ দিনের পরিবর্তে ১৮০ দিন করা, ইডিএফ এর অর্থে ব্যাক টু ব্যাক এলসির দায় পরিশোধে সুযোগ ইত্যাদি।

এছাড়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলেও খেলাপি হিসেবে শ্রেণিকরণ না করা ইত্যাদি।

২০২০ সালের মার্চের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে দেওয়া সুবিধাগুলোর মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত বছরের জুন মাসে বাড়ানো মেয়াদও শেষ হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে।

এছাড়া ২০২১ সালে বকেয়া হওয়া ঋণের ১৫ শতাংশ পরিশোধ করেই খেলাপি হওয়া থেকে বেচে যান ব্যবসায়ীরা। সেই সুযোগ চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল বিশেষ বিবেচনায়।

সেই সুযোগটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বিজিএমইএ গভর্নরের কাছে দাবি তোলে।

একই সঙ্গে সংগঠনটি ‘এককালীন এক্সিটের’ অর্থের কিস্তি পরিশোধের সময় বাড়ানোর অনুরোধও করেছে।
২০১৯ সালের ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পুনঃতফসিল ও ‘এককালীন এক্সিট’ সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালার মাধ্যমে পুনঃতফসিল ঋণের মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সরল সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ টানা ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়।

আর এককালীন এক্সিট সুবিধাটি নিতে অর্থ পরিশোধের সময় দেওয়া হয় এক বছর।

গত ডিসেম্বরে সেই অর্থ পরিশোধের সময় শেষ হয়েছে অনেকের।

অপরদিকে মহামারীকালে পণ্য রপ্তানির পর অর্থ ফেরত আনার সময় বাড়িয়ে ২১০ দিন করা হলেও ডিসেম্বর পর্যন্ত অনেকে পুরো বা আংশিক আয় আনতে পারেননি অনেক রপ্তানিকারক।

লিখিত প্রস্তাবে বিজিএমইএ জানিয়েছে, ‘‘অনেক প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সংশ্লিষ্ট ইএক্সপিগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতেও এর সম্ভাবনা রয়েছে।’’

এজন্য রপ্তানি আয় বকেয়া থাকলেও যেন ব্যাংকগুলো রপ্তানিকারকের স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম চলমান রাখে সেজন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

বিজিএমইএর অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- পণ্য আমদানিতে বিল অব এন্ট্রি জমা দেওয়ার মেয়াদ বাড়িয়ে ১২০ দিনের পরিবর্তে ১৮০ দিন করা এবং গ্রুপ অব কোম্পানির কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি হলে সহযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকের অর্থায়ন সুবিধা বন্ধ না রাখা।

বন্ডেড ওয়্যার হাউজ না থাকা কোম্পানিগুলোকেও ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খোলার নুমতি চেয়েছে সংগঠনটি।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement