পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ছয় শক্তির আলোচনাকে সমর্থন দিলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কোনও ধরনের বৈঠকে বসবেন না বলে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এমনকি, ওয়াশিংটন ইরানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও নয়।
গত শুক্রবার ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর সোমবার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে রাইসি এই অবস্থান জানান দিলেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তার বৈদেশিক নীতিতে আরব উপসাগরীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক উন্নয়ন অগ্রাধিকার পাবে। ইরানের আঞ্চলিক শত্রু সৌদি আরবকে এখনই ইয়েমেনে আক্রমণ বন্ধ করারও আহ্বান জানান তিনি।
আগামী ৩ আগস্ট ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন কট্টরপন্থি রাইসি।
‘ইরান পরমাণু চুক্তি-২০১৫’ নিয়ে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে রাইসি বলেন, ‘‘যেসব আলোচনায় আমাদের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত থাকার নিশ্চয়তা রয়েছে আমরা ওই সব আলোচনায় সমর্থন দেব। আমেরিকার উচিত এখনই ইরান পরমাণু চুক্তিতে ফেরত আসা এবং চুক্তি অনুযায়ী সব শর্ত সম্পূর্ণরূপে পালন করা।”
ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে ২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশ ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের লাগাম টেনে ধরবে। বিনিময়ে ধীরে ধীরে দেশটির উপর থেকে নানা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
২০১৮ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানকে পরমাণু চুক্তির সব শর্ত কঠোরভাবে অনুসরণের সাপেক্ষে ওই চুক্তিতে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যা নিয়ে গত এপ্রিল থেকে ভেনিসে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।
ইরানের বিরুদ্ধে ক্রমাগত চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। ওদিকে তেহরান বলছে, পরমাণু অস্ত্র তৈরি নয় বরং তাদের পরমাণু কার্যক্রমের লক্ষ্য একেবারেই শান্তিপূর্ণ।
এ বিষয়ে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, ইরানের বৈদেশিক নীতি শুধু পরমাণু চুক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। তিনি বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রকে সব নিষেধাজ্ঞা অবশ্যই তুলে নিতে হবে এবং সেটা তেহরান যাচাই করবে।”
রাইসি তার সরকারের পররাষ্ট্রনীতি ব্যাখ্যা করে বলেন, বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ও যোগাযোগ রক্ষা করা হবে এবং ইরানের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেবে তার সরকার।
তিনি আরও বলেন, তার বৈদেশিক নীতিতে আরব উপসাগরীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক উন্নয়ন অগ্রাধিকার পাবে। ইরানের আঞ্চলিক শত্রু সৌদি আরবকে এখনই ইয়েমেনে আক্রমণ বন্ধ করারও আহ্বান জানান তিনি।
রাইসিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যদি ওয়াশিংটন সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়, তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন কি-না। জবাবে তিনি বলেন ‘না’।