ব্রাজিলে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়াল। যা বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুত্যুর সংখ্যা। আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তারপরই ব্রাজিল।
গতকাল শনিবার পর্যন্ত ব্রাজিলে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখের উপরে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্সেলো কোয়েইরোগা বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২ হাজার ৩০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৮৬৮।
গত ১০ মে’র পর থেকে এ সপ্তাহে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ২ হাজার ছাড়াল।
এসপিরিতো সান্তো বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারি বিশেষজ্ঞ ইথেল মাসিয়েল এএফপিকে বলেন, দেশের সংক্রমণ ও মৃত্যুর পরিস্থিতি দেখে বুঝা যায় দেশে এখন করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। ব্রাজিলে টিকাদান কর্মসূচি ও বিধিনিষেধ শিথিল থাকায় পরিস্থিতি সংকটজনক হচ্ছে। এমনকি দেশের বড় শহরগুলোতে রেস্তোরাঁ, বার ও দোকান খোলা থাকে। মাস্ক ব্যবহারেও উদাসীন দেখা যায় দেশবাসীকে। ব্রাজিলের ২৭টি রাজ্যের মধ্যে প্রায় তৃতীয়াংশ রাজ্যগুলোর পরিস্থিতিই সংকটজনক। সেখানে কেউ মেনে চলছেনা বিধিনিষেধ।
গত মে মাসের দিকে ব্রাজিলে মৃত্যু ও আক্রান্ত উভয়ই হ্রাস পেয়েছিল। এমতাবস্থায়, দেশটিতে দৈনিক মৃত্যু ২ হাজারের নিকটবর্তী থাকলেও বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছিল। যার ফলে দেখা দিয়েছে তৃতীয় ঢেউ।
দেশটিতে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত হয়েছেন, ১ কোটি ৭৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৫০ জন। মোট সুস্থ্য হয়েছেন ১ কোটি ৬১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৪৯ জন।
এমন পরিস্থিতিতে গভীর উদ্যোগ জানিয়ে দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যে ধীর গতিতে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে, এরকম ভাবে চলতে থাকলে, শীতের শুরুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু ভয়াবহ ও কঠিনরূপ ধারণ করবে।
একদিকে দেশটিতে টিকা কার্যক্রম চলছে ধীর গতিতে, অন্যদিকে বিধিনিষেধ শিথিল যার কারণে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। দেশটিতে মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষকে টিকা নিশ্চিত করা হয়েছে। যা তুলনামূলকভাবে একেবারেই কম। এই ধীর গতিতে টিকা কার্যক্রমের পেছনে দেশটির কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন দেশের অধিকাংশ মানুষ। প্রথম থেকেই করোনা সম্পর্কে একের পর একের পর এক নেতিবাচক মন্তব্য করে আসছেন তিনি। এমনকি মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে তিনি নারাজ। বিধিনিষেধ অমান্য করার কারণে দুই দফায় তিনি জরিমানা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
এমতাবস্থায় দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভয়াবহ করোনায় আক্রান্তের ও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে একদিকে টিকাদান কর্মসূচি দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে, অন্যদিকে সবাইকে বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।