করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে ভারতে। প্রতিদিনই সামনে আসছে ভয়ঙ্কর সব তথ্য। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৬ হাজার ১৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃত্যু দাঁড়াল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৯৪ হাজার ৫২ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়াল ২ কোটি ৯১ লাখ ৮৩ হাজার ১২১ জনে।
এর আগে করোনায় একদিনে এত মৃত্যু দেখেনি ভারত। আর এই মৃত্যুর হার বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে বিশেষজ্ঞদের কপালে। করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতিই প্রাণ কাড়ছে বহু মানুষের। তবুও করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে টিকা হয়ে উঠবে অন্যতম হাতিয়ার, এমনটি মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, ভারতের বিহারে করোনায় মৃত্যুর হার বেড়ে ৭২.৮৪ শতাংশ। বিহারের ৩৮টি জেলার করোনায় মৃত্যুর হার যাচাই করে দেখেছে ভারতের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপরই হিসাব বেড়ে গেল রাতারাতি। গত ১৮ মে পাটনা হাইকোর্টের নির্দেশের পরই কার্যত নড়েচড়ে বসে বিহার সরকার। এরপরই বিহার সরকারের স্বীকারোক্তি, ৩ হাজার ৯৫১টি মৃত্যু অতিরিক্ত হয়েছে। যেগুলো হিসাবের মধ্যে ছিল না এতদিন। আগের দিন যেখানে মৃত্যুর মোট সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ৪২৪ জন, সেখানে পরের দিন ভালোভাবে যাচাই করার পর হয়ে গেল ৯ হাজার ৩৭৫ জন।
তবে বিহার সরকারের অতিরিক্ত সচিবের দাবি, বেসরকারি হাসপাতালে, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পথে, হোম আইসোলেশনে ও করোনা পরবর্তী ক্ষেত্রে নানা জটিলতার জেরেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। সেই হিসাবগুলো আগে ধরা হয়নি।
দেশজুড়ে প্রবল সমালোচনার মুখে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে বিনা মূল্যে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ৭ জুন দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণে এ কথা জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২১ জুন থেকে এই লক্ষ্যে সব রাজ্য সরকারকে বিনা মূল্যে টিকা সরবরাহ করা হবে। করোনা পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে ১ মে থেকে সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে (১৮ বছরের ঊর্ধ্বে) টিকাদানের কর্মসূচি হাতে নেয় ভারত।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানলে প্রায় দুই মাস আগে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। এখন সংক্রমণ কমতে থাকায় সতর্কতার সঙ্গে বিধিনিষেধ শিথিল করার প্রক্রিয়া চলছে।
৩০ এপ্রিল ভারতে প্রথম এক দিনে চার লাখের বেশি মানুষের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারপর একাধিক দিন দেশটিতে চার লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হন।