রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের পাঁচজনের কোভিড পজিটিভ ছিলেন। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
শুক্রবার (২৫ জুন) সকালে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টার মধ্যে বিভিন্ন সময় মারা যাওয়া ছয়জন রাজশাহীর। বাকিদের মধ্যে চাঁপাইনবাগঞ্জের চারজন, নাটোরের একজন ও নওগাঁর তিনজন। এদের মধ্যে দুইজন মারা যান আইসিইউতে।
মারা যাওয়াদের সাতজন পুরুষ ও সাতজন নারী। এদের মধ্যে চারজনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। বাকিদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে চারজন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের একজন।
এ নিয়ে এ মাসের ২৫ দিনে (১ জুন সকাল থেকে ২৫ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ২৭৪ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ১২৭ জন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯৭ জন। এর আগে সবচেয়ে বেশী মারা যান ২৪ জুন ১৮ জন এবং সবচেয়ে কম ১২ জুন চারজন।
শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৫ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৪৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৮, নাটোরের পাঁচ, নওগাঁর ছয়, পাবনার একজন ও কুষ্টিয়ায় একজন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪৩ জন। শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৩৫৭ বেডের বিপরীতে মোট চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ৪২৩ জন। বাকিদের মেঝে ও বারান্দায় অতিরিক্ত বেড তৈরি করা হয়েছে।
এর মধ্যে রাজশাহীর ২৮৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬৪ জন, নাটোরের ৩১ জন, নওগাঁর ২৯ জন, পাবনার আট জন, কুষ্টিয়ার তিনজন, চুয়াডাঙ্গার দুইজন, দিনাজপুরের একজন ও ঢাকার একজন রয়েছেন। আইউসিইউতে ভর্তি আছেন ২০ জন।
রাজশাহীতে ৩০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে কোভিড শনাক্তের হার। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার ৩০ থেকে ৫০ এর ঘরে ছিল। যা বেড়ে সর্বচ্চে ৬১ শতাংশের উপরে উঠে। তিন সপ্তাহের চলমান লকডাউনের মধ্যে গত পাঁচদিন থেকে কমতে শুরু করে।
ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিাবর দুইটি ল্যাবে রাজশাহীর ৪০০ নমুনা পরীক্ষা করে ১১৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। যা আগের দিনের চেয়ে ৪ দশমিক ২ শতাংশ কমে করোনা শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যা আগের দিন ছিল ৩৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এর আগের মঙ্গলবার ৩৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং সোমবার ছিল ৩৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।
ল্যাব সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পৃথক ল্যাবে ৫৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে কোভিড পজিটিভ এসেছে ১৮০ জনের। রাজশাহী ছাড়াও নওগাঁর ১৬০ নমুনার মধ্যে পজিটিভ এসেছে ৬১ জনের। শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়াও বিদেশগামী আটজনের নমুনা পরীক্ষা করে একজনের পজিটিভ এসেছে।
উল্লেখ্য, গত ঈদের পর থেকে রাজশাহীতে কোভিড সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকলে গত ১১ জুন সিটি করপোরেশন এলাকায় এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ১৬ জুন সেটি আরেক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২৪ জুন মধ্য রাত পর্যন্ত করা হয়। বুধবার তা আরেক দফা বাড়িয়ে আগামী ৩০ জুন মধ্য রাত পর্যন্ত করা হলো। শুক্রবার থেকে তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হয়েছে।