৭ নভেম্বর, ২০২৪, বৃহস্পতিবার

লকডাউনে জনদুর্ভোগ চরমে

Advertisement

ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় এখন ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্টসহ আরো একাধিক ভেরিয়েন্ট। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার ঢাকার পাশের নতুন কয়েকটি এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করেছে, যার মাধ্যমে কার্যত রাজধানী ঢাকার সঙ্গে অন্য সব এলাকার যাতায়াত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে মঙ্গলবার সকাল থেকে। ঢাকা থেকে সারা দেশে দূরপাল্লার বাস ও সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। গণপরিবহন, শপিংমল ও রেস্টুরেন্টে স্বাস্থ্যবিধি মানতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ঢাকার পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জে লকডাউন ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।  ফলে এসব এলাকার কোনো গণপরিবহণ ঢাকায় প্রবেশ করতে পারছে না।

গাজীপুরে দূরপাল্লার বাস তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিশেষ করে অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তিদের দুর্দশার যেন শেষ নেই। রাজধানীর উত্তরপ্রান্ত সংলগ্ন আব্দুল্লাহপুরে শত সহস্র মানুষের চলাচলের দুর্গতি নজরে আসে।

শনিরআখড়ার ভ্যানচালক নূর আলম তার মা গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় সাত দিন আগে গ্রামে যান। মা কিছুটা সুস্থ হওয়ায় গতকাল ঢাকা রওনা হয়েছেন। বিভিন্ন যানবাহন পরিবর্তন করে বাইপাইল এবং বাইপাইল থেকে লেগুনায় আব্দুল্লাহপুর এসেছেন। এখন বেড়িবাঁধ পর্যন্ত হেঁটে সিটি বাসে উঠবেন। এত কষ্ট করে কেন আসলেন জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, গ্রামে খাব কী। তা ছাড়া মাকেও টাকা পাঠাতে হবে।

শেরপুরগামী রিয়াজ জানান, পাঁচ দিন আগে ঢাকা এসে এক আত্মীয়ের বাসায় উঠে চোখ পরীক্ষা করান তিনি। চোখের সমস্যা মারাত্মক হওয়ায় জরুরি অপারেশন করাতে হয়েছে। এর মধ্যে লকডাউন শুরু হলে তিনি পড়ে যান উভয় সংকটে। জমি বন্ধকের সামান্য টাকা ইতোমধ্যে চোখের চিকিৎসায় ফুরিয়ে গেছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই বাড়ির পথে রওনা হতে হয়েছেন তিনি।    

হঠাৎ সরকারের দেওয়া এই কঠোর সিদ্ধান্তকে দায়ী করেছেন অনেকে। চিকিৎসা গ্রহণের প্রয়োজনে এবং জীবিকার তাগিদে বের হওয়া লোকদের বিকল্প ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন তারা।          

উত্তরা পূর্ব ট্রাফিক জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, দেশে করোনা বেড়ে যাওয়ায় সরকার এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য ফলপ্রসূ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল, মাস্ক পরিধান এবং লকডাউন। জনগণ সচেতন হলে এ সময় দুর্ভোগ এড়িয়ে বাসায় থাকবেন। কিন্তু সচেতনতার অভাব এবং জরুরি প্রয়োজনে কিছু মানুষ চলাচল করতে গিয়ে কিছুটা দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনায় পড়ছেন। আমরা কাজ করছি এবং আশা করছি সচেতনতা বাড়বে। বিড়ম্বনাও কমবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement