সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানােনার জন্য খ্যাতিমান গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। আজ বেলা ১২টার দিকে তার মরদেহ সেখানে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
দুপুর ১টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ফকির আলমগীরের মরদেহ রাখা হবে শহীদ মিনারে। তার আগে বেলা ১১টার দিকে খিলগাঁও পল্লীমা সংসদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো শেষে যোহরের নামাজের পর খিলগাঁও মাটির মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে তার দাফন করা হবে।
টানা আট দিন করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে শুক্রবার রাতে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান গণমানুষের শিল্পী ফকির আলমগীর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে রেখে গেছেন।
ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া তাঁর মৃত্যুতে সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কণ্ঠযোদ্ধা ফকির আলমগীরের জন্ম ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে। কালামৃধা হাইস্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। জগন্নাথ কলেজ (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন গুণী এই ব্যক্তি।
১৯৬৬ সালে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন ফকির আলমগীর। সেই সূত্রেই গণসংগীতে আসা। ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে তিনি ষাটের দশক থেকেই সরব হয়ে ওঠেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আগে যেসব বড় আন্দোলন হয়েছিল, সেগুলোতে অসামান্য ভূমিকা রেখেছিলেন ফকির। তার কণ্ঠ বজ্র হয়ে বেজেছিল আন্দোলনের মিছিলে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে ফকির আলমগীর যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। কণ্ঠসৈনিক হিসেবে তিনি স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের মনে ছড়িয়ে দেন বিজয়ের স্পৃহা, সাহসের আলো।
রাষ্ট্রীয়ভাবে একুশে পদকে ভূষিত হওয়া ছাড়াও অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন ফকির আলমগীর। তবে মানুষের ভালবাসা যা পেয়েছেন তার রেশ থেকে যাবে যুগ যুগান্তর।