সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এরই মধ্যে রাজধানী ও আশপাশের কয়েকটি এলাকায় পৌঁছে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা থেকে এই ভ্যারিয়েন্ট সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার বড় ঝুঁকি রয়েছে।
দেশে সংক্রমণের ৮০ শতাংশই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে (ধরন) বলে সরকারের একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে। ভারতীয় ধরন হিসেবে পরিচিত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের প্রমাণও পাওয়া গেছে ওই গবেষণায়। দুই সপ্তাহ ধরেই ঢাকার তুলনায় শনাক্ত ও মৃত্যু দুটিই বেড়েছে ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে এ পরিস্থিতি মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
শুক্রবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) থেকে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, দেশে ডেল্টা বা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক বিস্তার ঘটেছে। তাঁদের মতে, দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সীমান্তবর্তী এলাকায় আগে ছড়ালেও তা যেভাবে ঢাকায় এসে পৌঁছল, ঠিক সেভাবেই এখন তা ঢাকা মহানগরীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং ঢাকার বাইরে দ্রুত বিস্তারের বড় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকায় এখন যেভাবে শনাক্ত ও মৃত্যু তুলনামূলক কম আছে, সেটা আগামী দুই সপ্তাহে পাল্টে গিয়ে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠতে পারে। এ ক্ষেত্রে জরুরি হয়ে পড়েছে একাধারে সংক্রমণ রোধ ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনাকে আবার প্রস্তুত রাখা।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইডিএসএইচআই) করোনভাইরাসের ৫০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করেছে। সেখান থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
গবেষণায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি সংক্রমণ বিদ্যমান। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা ১৬টি নমুনার মধ্যে ১৫টি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং গোপালগঞ্জ থেকে সাতটি নমুনার সবগুলোর মধ্যেই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। খুলনা থেকে সংগ্রহ করা তিনটি নমুনাই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট এবং ঢাকা থেকে সংগ্রহ করা চারটি নমুনার মধ্যে দুটি ছিল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এ ছাড়া দিনাজপুর, গাইবান্ধা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ ও পিরোজপুর থেকে সংগ্রহ করা নমুনায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া গেছে।
গত বছরের অক্টোবরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম শনাক্ত করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্টটিকে ‘উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট’ বলে অভিহিত করেছে।