টার্গেট খুব বড় না হলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১ ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়টা খুব সহজ ছিলো না বাংলাদেশের। ২৪১ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শুরুটা ভালোই করেছিলো ক্যাপ্টের তামিম ইকবাল ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিটন কুমার দাস। দুজনই ব্যাট হাতে বড় রান করার আভাস দিচ্ছিলেন, কিন্তু ছন্দ পতন ঘটে দলীয় ৩৯ রানে। জাংওয়ের বলে কাভার পয়েন্ট দিয়ে গ্যাপ তামিম ঠিকই বের করেছিলেন কিন্তু দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা সিকেন্দার রাজাকে ফাঁকি দিতে পারেননি। পয়েন্ট দাঁড়িয়ে থাকা সিকেন্দার নিজের ক্যারিযাররের সেরা ক্যাচটাই নিলেন আজকের ম্যাচে, এমন ভাবাটা দোষের কিছু নয়। ব্যাক্তিগত ২০ রানে মাঠ ছাড়লেন টাইগার ক্যাপ্টের। দলের রান তখন ১ উইকেটে ৩৯।
ওয়ান ডাউনে মাঠে আসেন সাকিব, লিটকে সাথে নিয়ে করতে থাকেন ইনিংস মেরামত। কিন্তু আজকের দিনে ব্যর্থ হলেন লিটন, সাকিবকে ক্রিজে রেখে ব্যাক্তিগত ২১ রানে ফিরে গেলের ড্রেসিং রুমে। নাগারভার বলে টেইলরকে ক্যাচ দেওয়ার আগে সাকিবের সাথে লিটনের পার্টনারশিপ ছিলো মাত্র ৭।
এর পরের দুই ব্যাটার এসেছেন আর গেছেন, সাকিব একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখেছেন তাদের যাওয়া-আসা। মিথুন ২ আর মোসাদ্দেক যখন ৫ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন, তখন পরাজয়ের শঙ্কায় পরে বাংলাদেশ। ৭৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়ে সাকিবের কপালে। তবে ছয় নম্বর ব্যাটার হিসেবে রিয়াদ এসে কিছুটা হালকা করেন সেই হারের শঙ্কা। সাকিবের সাথে ৫৫ রানের জুটি গড়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন দুরন্ত গতিতে, কিন্তু সেই পথে কাটা হয়ে দাঁড়ায় মুজারাবানি। দলীয় ১৩০ রানে রিয়াদকে ফিরিয়ে ম্যাচ নিয়ে যায় নিজেদের অনুকুলে।
তখনও সাকিব আছেন ক্রিজে, মাঝের দুই ব্যাটার মিরাজ ও আফিস হতাশ করেন গোটা জাতিকে। ম্যাচে ৩৯ ওভারে আফিস যখন আউট হন তখন বাংলাদেশে স্কোর দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৭৩। তখন হয়তো অনেকেই টিভি সেটের সামনে থেকে সরে গিয়েছিলেন, কিন্তু সাকিব ছিলো অবিচল!
বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনকে সাথে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান সাকিব। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৬৯ রানের জুটি। সাইফউদ্দিন খেলেন ৩৪ বলে হার না মানা ২৮ রানের ইনিংস।
আর সাকিবের অপরাজিত ৯৬ রানে ভর করে সহজ জয়কে কঠিন করে জালে আটকায় বাংলাদেশ। স্বাগিতদের বিপক্ষে টাইগারররা জয় পায় ৩ উইকেটে, সাথে ঘরে তোলে আইসিসি সুপার লিগের মহামুল্যবান ১০ পয়েন্ট। আর দীর্ঘ এক যুগ পরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাদের মাটিতে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ওয়ানডের সংক্ষিপ্ত স্কোর:
টস:জিম্বাবুয়ে
জিম্বাবুয়ে: ৫০ ওভার ৯ উইকেটে ২৪০ রান
মাধেভেরে করেন ৫৬, টেলর ৪৬, মায়ার্স ৩৪ ও রাজা ৩০
শরিফুল ৪৬ রানে ৪ উইকেট, সাকিব ৪২ রানে ২ উইকেট, তাসকিন ৩৮রানে ১টি মিরাজ ৩৪ রানে ১টি, সাইফউদ্দিন ৫৪ রানে নেন ১ উইকেট
বাংলাদেশ: ৭ উইকেটে ২৪২ (৫০ ওভার)
সাকিব অপরাজিত ৯৬, সাইফউদ্দিন অপরাজিত ২৮, রিয়াদ করেন ২৬রান লিটন ২ ও তামিম ২০,
জংওয়ে ৪৬ রানে ২ উইকেট, এনগারাভা নেন ১ উইকেট
ফলাফল: বাংলাদেশের জয় তিন উইকেটে
এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয় টাইগারদের।