১৮ মে, ২০২৪, শনিবার

অপরিণত শিশুদের ৩০ ভাগেরই চোখে নানা সমস্যা দেখা দেয় : ডা. তারিক রেজা আলী

Advertisement

দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করে। এদের মধ্যে প্রায় চার লাখ অপরিণত। আর এ অপরিণত শিশুদের চোখের রেটিনা স্বাভাবিকভাবেই অপরিণত থাকে। ৭০ ভাগ ক্ষেত্রেই রেটিনা ধীরে ধীরে পরিপূর্ণতা পায়। বাকি ৩০ ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা দেয় নানা সমস্যা। এ শিশুদের খুঁজে বের করতে নিয়মিত চক্ষু বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা (স্ক্রিনিং) দরকার।

(২৫ সেপ্টেম্বর) রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে বিশ্ব রেটিনা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত এক উন্মুক্ত আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানান সংগঠনটির মহাসচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. তারিক রেজা আলী।

তিনি বলেন, রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচিউরিটি বা অপরিণত শিশুর রেটিনার একটি রোগ। এটি আমাদের দেশে একটি নতুন সমস্যা। তবে বর্তমানে আমাদের দেশে অপরিণত শিশুদের যত্ন নেওয়ার বিশেষ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের সক্ষমতা বেড়েছে। এ রোগের চিকিৎসা আছে। লেজার করা হয়, চোখের ভেতর ইনজেকশনও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে যদি এই রোগ ধরা যায়, তাহলে শিশুর দৃষ্টি রক্ষা করা সম্ভব।

তারিক রেজা আলী বলেন, ১৫ বছর বা আরও বেশি সময় ধরে যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের মধ্যে প্রায় ২ শতাংশ মানুষ অন্ধ হয়ে যান। আরও ১০ শতাংশের দৃষ্টিশক্তির গুরুতর অবনতি ঘটে। ডায়াবেটিস যাদের আছে তাদের উচ্চ রক্তচাপ থাকা খুবই স্বাভাবিক। এই রোগে চোখের রেটিনার নানা সমস্যা হতে পারে। সঠিক চিকিৎসা না হলে এ থেকেও অন্ধত্ব হতে পারে।

তিনি বলেন, রেটিনার রোগ প্রতিরোধ করার জন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে বছরে একবার রেটিনা পরীক্ষা করাতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। একইসঙ্গে বছরে একবার রেটিনা পরীক্ষা করাতে হবে। বয়স ৬০ এর বেশি হলে বছরে একবার ম্যাকুলা বিষয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। অপরিণত শিশু জন্ম নিলে অবশ্যই সঠিক সময়ে চোখ পরীক্ষা করাতে হবে।

এক সমীক্ষায় দেখা যায়, অন্ধত্বের সামগ্রিক কারণের মধ্যে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির জন্য অন্ধত্ব বরণ করে শতকরা ১২ দশমিক ৫ ভাগ। ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী এই একই সমস্যায় ভুগতে পারেন।

আলোচনা সভায় বলা হয়, ডায়াবেটিস আমাদের দেশে এখন মহামারি রূপে আবির্ভূত হয়েছে। ডায়াবেটিস চোখের সব অংশেরই তুলনায় রেটিনায় বেশি ক্ষতি করে।

বক্তারা বলেন, চোখের ভেতরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ রেটিনা। বিভিন্ন রকম শারীরিক ও চোখের সমস্যায় রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে একজন ব্যক্তি আজীবনের জন্য অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। আমাদের দেশে রেটিনার সমস্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এ নিয়ে মানুষের সচেতনতা কম। নানা রকম শারীরিক রোগ ও চোখের সমস্যায় রেটিনা আক্রান্ত হয়। ফলে একজন ব্যক্তি একেবারেই অন্ধ হয়ে যেতে পারেন।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা ও গবেষণা) অধ্যাপক মো. জাহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এশিয়া প্যাসিফিক একাডেমি অব অপথালমোলজির সভাপতি (ইলেক্ট) অধ্যাপক আভা হোসেন এবং বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ সাঈদ।

সংগঠনের সহ-সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইউভিয়া সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম, গ্লুকোমা সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক হাসান শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারেক্ট অ্যান্ড রিফ্রাকটিভ সার্জনসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. জাফর খালেদ ও বাংলাদেশ একাডেমি অব অপথালমোলজির অনারারি সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মো. শওকত কবীর।

জানা গেছে, দেশে এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্ব রেটিনা দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘রেটিনা সম্বন্ধে জানুন, দৃষ্টি সুরক্ষিত রাখুন’।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement