৩০ এপ্রিল, ২০২৪, মঙ্গলবার

২০২৩ সালে ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালাতে চায় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স

Advertisement

দেশের বিমানবন্দর ক্যাটাগরী ওয়ানে উন্নীত হলে  ২০২৩ সালে ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক এবং ইউরোপের বিভিন্ন রুটে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শিগগির এশিয়ার অন্যতম গন্তব্য জেদ্দা, দাম্মাম, মদিনা, রিয়াদসহ শারজাহ, আবুধাবীতে ফ্লাইট পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি খাতের অন্যতম এই এয়ারলাইন্স কোম্পানি। সোমবার কক্সবাজারে আয়োজিত এক প্রেস মিট অনুষ্ঠানে এসব পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। 

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ মোঃ কামরুল ইসলাম প্রেস মিট অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পরিকল্পনা, এভিয়েশন খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কাস্টমার সার্ভিস কক্সবাজার এর সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ইরশাদ হাসান। 

কামরুল ইসলাম বলেন, আগামী ১৯ নভেম্বর থেকে আগামী ১৯ নভেম্বর হতে ঢাকা থেকে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে প্রথমবারের মতো সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে। আগামী বছরের শুরুতে ঢাকা থেকে কলম্বো রুটেও ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে ইউএস-বাংলার।

তিনি জানান, গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে ক্রস কাউন্ট্রি ধারণা থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যশোর থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং উত্তরবঙ্গের একমাত্র সচল বিমানবন্দর সৈয়দপুর থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে। শীঘ্রই সৈয়দপুর থেকে কক্সবাজার, সিলেট থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার রুটেও ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে করে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের সময় ও অর্থ দুটিই সাশ্রয় হবে।ইউএসবাংলা কক্সবাজার

এসময় জানানো হয়, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটকে আরো বেশী শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নতুন রুট ও ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধির পরিকল্পনার সাথে চলতি বছরের শেষে এবং আগামী বছরের শুরুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর বিমান বহরে আরো তিনটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও ৪টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট বহরে যোগ করতে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের মধ্যে বিমান বহরে আরো ৮টি এয়ারবাস ৩২১-এলআর সিরিজের এয়ারক্রাফট যোগ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। 

বর্তমান ইউএস-বাংলার বিমান বহরে ৪টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ৭টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০সহ মোট চৌদ্দটি এয়ারক্রাফট রয়েছে। কোভিড মহামারির মধ্যে বাংলাদেশ সরকার তথা সিভিল এভিয়েশন অথরিটির অনুমতিক্রমে ইউএস-বাংলা প্যাসেঞ্জার এয়ারক্রাফটগুলোকে সাময়িকভাবে কার্গো এয়ারক্রাফটে রূপান্তর করে আয়ের পথকে কিছুটা সচল রাখার চেষ্টা করেছে।

নিয়মিত ভ্রমণকারীদের জন্যও বেশ কিছু সুবিধা নিয়ে আসছে ইউএস বাংলা।  ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স খুব শীঘ্রই প্রথমবারের মতো সেলফ চেক-ইনের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে। যা ইউএস-বাংলার এগিয়ে যাওয়ার নিদর্শন। ইউএস-বাংলার ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ারদের জন্য ঢাকায় আলাদা চেক-ইন কাউন্টার এর ব্যবস্থা করেছে। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটি বিমানবন্দরে স্কাইস্টার গ্রাহকদের জন্য আলাদা চেক-ইন কাউন্টার করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।ইউএসবাংলা কক্সবাজার

এসময় জানানো হয়, গত প্রায় আঠারো মাস যাবত সারাবিশ্ব কোভিড ১৯ মহামারিতে বিপর্যস্ত অবস্থায় অতিক্রম করেছে। সর্বপ্রথম করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসে এভিয়েশন এন্ড ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারাবিশ্বের আকাশপথ অনেকটা লক ডাউন অবস্থায় ছিলো। গত বছর করোনা ভাইরাসের প্রথম ধাপ ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাস থেকে এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। জুন-জুলাই পর্যন্ত প্রায় সকল ধরনের আকাশ পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ ছিলো। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপের পর স্বল্প পরিসরে আন্তর্জাতিক রুট গুলোতে নানাবিধ স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা মেনে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে অন্যান্য এয়ারলাইন্সের ন্যায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সও।

কামরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এয়ার বাবল চুক্তির অধীনে ঢাকা থেকে কলকাতা ও চেন্নাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে ইউএস বাংলা। ইতিমধ্যে কলকাতা, চেন্নাই ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের গন্তব্য দুবাই, দোহা, মাস্কাট, এশিয়ার অন্যতম গন্তব্য সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, চীনের গুয়াংজুতে স্বল্প পরিসরে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা। খুব শীঘ্রই ব্যাংকক রুটেও ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

এসময় জানানো হয়, করোনা ভাইরাসের মহামারির সময় বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনতে ইউএস-বাংলা দুবাই, আবুধাবী, দিল্লী, চেন্নাই, মালে, কুয়ালালামপুর, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, হ্যানয়, এমনকি ফ্রান্সের প্যারিসসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১৫০ টির অধিক স্পেশাল ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। বিশ্বের অনেক বিখ্যাত এয়ারলাইন্স কোভিড ১৯ এর সময় এয়ারলাইন্সকে টিকিয়ে রাখার জন্য এমপ্লয়ি ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে কিন্তু ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্মীদের নিজের পরিবারে রেখে দেয়ার মানসিকতা দেখিয়েছে। সকল কর্মীদের বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টেস্ট করতে সহযোগিতা করেছে।ইউএসবাংলা কক্সবাজার

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বর্তমানে সকল ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করে সবগুলি অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ৭টি ব্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ ও তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী ও বরিশাল রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা। এছাড়া বোয়িং ৭৩৭-৮০০ দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটেও ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

কামরুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার পর ইউএস-বাংলাই একমাত্র দেশীয় এয়ারলাইন্স যা প্রথমবারের মতো চীনের কোনো গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে। ২৬ এপ্রিল ২০১৮ থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিনিয়ত ঢাকা থেকে গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া চেন্নাই রুটে বাংলাদেশী নাগরিক যারা চিকিৎসা নিতে যান তাঁদের সেবা দেয়ার সুযোগ পেয়েছে ইউএস-বাংলা।

প্রেসমিটে জানানো হয়, নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এভিয়েশন এন্ড ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সহায়তার জন্য আবেদন করেছে বেসরকারী এয়ারলাইন্সগুলো। বিশেষ করে এ্যারোনটিক্যাল ও নন-এ্যারোনটিক্যাল চার্জকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা, জেট ফুয়েল প্রাইসকে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে নিরূপন করা ইত্যাদি ইত্যাদি। এক্ষেত্রে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে, যাতে বহির্বিশ্বের এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকতে পারে। 

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement