১৯ মে, ২০২৪, রবিবার

ইটভাটার পরিধি বাড়াতে চর দখল করে নিয়েছে

Advertisement

বিষখালী নদী তীরের মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। চরের এই মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ইট। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বরগুনার বামনা উপজেলার ইটভাটাগুলো ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে মাটি কিনে ভাটায় নিয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে বলে দাবি করছে ভাটা মালিকেরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকমাস ধরে বিষখালী নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। নদীর তীর থেকে মাটি কেটে ভাটার মালিকদের কাছে বিক্রি করে থাকে স্থানীয় একটি চক্র। আবার ইটভাটায় মালপত্র পরিবহনের জন্য নদী ভরাট করে ঘাট তৈরি করেছে ভাটা মালিকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বামনা উপজেলা খোলপটুয়া এলাকায় বিষখালী নদীর তীরে জেগে ওঠা চর থেকে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কেটে নাজাত ব্রিকস নামের একটি ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে একই উপজেলার রামনা এলাকায় এমএমবি-২ ইটভাটার পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে ভাটাসংলগ্ন এলাকার বিষখালী নদীতে পিলার ও গাছের পাইলিং করে ঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। বামনা এলাকার পূর্ব সফিপুর এলাকায় ভাটার পরিধি বাড়াতে চর দখল করে নিয়েছে এমকেএস ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা।

খোলপটুয়া এলাকার বাসিন্দা মনির, আবু জাফর, লাতিফসহ কয়েকজন স্থানীয় বলেন, বাঁধের পাশ থেকে এভাবে মাটি কাটায় হুমকিতে পড়েছে বেড়িবাঁধ। এতে আমরা গ্রামবাসীরা ঝুঁকিতে আছি। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের হুমকি দেওয়া হয়। এই বাঁধ যেকোনো  সময় ভেঙে যেতে পারে। বাঁধ ভেঙে গেলে পানি ঢুকে আমাদের সম্পদের ক্ষতি হবে। মাটি কাটা বন্ধে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

নাজাত ব্রিকসের গাড়ি চালক আল আমিন বলেন, প্রতিদিন দুই হাজার টাকা মজুরিতে নদীর চর থেকে কাটা মাটি ভাটায় পরিবহন করে থাকি। ৪০ থেকে ৪৫ গাড়ি মাটি ভাটায় নেওয়া হয়। এ বিষয়ে আপনাদের কোনো কিছু জানার থাকলে ভাটার অফিসে গিয়ে বসেন, মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন।

নাজাত ব্রিকসের মালিকের ছেলে আল আমিন নাজাত বলেন, এখানে সরকারি কোনো জমি নেই। স্থানীয়রা আমাদের কাছে মাটি বিক্রি করেছে। তাই মাটি কেটে ভাটায় নেওয়া হচ্ছে। 

এদিকে নদী ভরাট করে ঘাট নির্মাণ করে পণ্য ওঠা নামার জন্য বালু ও মাটি দিয়ে নদী ভরাট করেছে এমএমবি ব্রিকস নামে অপর একটি ইটভাটা। এ বিষয়ে এমএমবি ব্রিকসের পরিচালক মোস্তফা ফকির বলেন, নদীর চরের মাটি ছাড়া ইট তৈরি হয় না। উপজেলা সব ভাটাগুলোতে নদীর চরের মাটি নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে চর কিনে মাটি সংগ্রহ করি। দুই বছর পর আবার মাটি কাটা চর ভরে যায়। তারপর আবার ও কিনে থাকি। নদীর ক্ষতি হয় এমন কিছু আমরা করি না।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসংলগ্ন এলাকার মাটি কাটা অবৈধ। সরেজমিনে পরিদর্শন করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার গণমাধ্যমকে বলেন, নদী তীরের মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া বেআইনি। যদি নদীর তীরের মাটিকাটা হয় তা হলে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement