বগুড়া ব্যুরো : আজ ১৩ ডিসেম্বর বগুড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে মিত্র বাহিনীর সহায়তায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে বগুড়া শহর মুক্ত করেন। ক্রমাগত তিনদিন যুদ্ধের পর শহরের বৃন্দাবনপাড়া এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ১০ ডিসেম্বর সকালে মিত্র বাহিনীর ৬৪ মাউনটেন্ট রেজিমেন্টের ব্রিগেডিয়ার প্রেম সিংহ ৯ জন বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা ও এক ব্রিগেড সৈন্য নিয়ে শহর থেকে ৩ মাইল উত্তরে চাঁদপুর, নওদাপাড়া এবং ঠেঙ্গামারা গ্রামের মধ্যবর্তী লাঠিগ্রামের কাছে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে অবস্থান নেন। সেখানে ৩ দিন ভয়াবহ সম্মুখযুদ্ধের পর মিত্র বাহিনীর আর্টিলারি ডিভিশন ট্যাংক নিয়ে শহরে ঢোকে।
এদিকে ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর কাহালু উপজেলা পাকহানাদার মুক্ত হয়। সকাল ৭টার দিকে চারমাথা রেল গেট এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা মুজিব বাহিনীর কমান্ডার অধ্যক্ষ হোসেন আলীর কাছে আত্মসমর্পণ করলে কাহালু মুক্ত হয়।
এছাড়া আজ নন্দীগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস। ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা থানায় আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ২০০ পাকসেনা রাজাকারদের সঙ্গে লড়াই করেন। সেই যুদ্ধে ৮০ জন রাজাকারকে আটক ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেন। ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা নন্দীগ্রাম থেকে পাকহানাদার ও রাজাকারদের হটিয়ে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন।
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) : আজ ১৩ ডিসেম্বর উল্লাপাড়া মুক্ত দিবস। ৭১’এর মুক্তিযুদ্ধের আজকের এই দিনে মুক্তিবাহিনীরা উল্লাপাড়ায় ত্রিমুখী আক্রমণ করলে পাকবাহিনী তাদের ক্যাম্প হামিদা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও আবদুর রহমানের পাট গুদামে আগুন ধরিয়ে দেয়। সকাল ১০টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা থানা চত্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
লালপুর (নাটোর) : আজ লালপুর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে পরাজিত পাক হানাদার বাহিনী লালপুর থেকে বিতাড়িত হয়। এই দিবসটি পালন উপলক্ষে লালপুরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ওপর আলোচনা সভা ও কবিতাবৃত্তি আয়োজন করা হয় । ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাক বাহিনী ও রাজাকারদের সহায়তায় লালপুরের বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিকাণ্ড ও লুটতরাজ চালায়। ১৩ ডিসেম্বর খান সেনারা ঝটিকা আক্রমণ করে মহেশপুর গ্রামে ৩৬ জনকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এর মাধ্যমে পাক হানাদার মুক্তি হয় লালপুর।