দাম কমে যাওয়ায় ক্ষেত থেকে শসা উঠিয়ে বাজারে নেওয়ার ইচ্ছা অনেকটাই চলে গেছে চাষিদের। তবুও বাজারে কয়েকগুণ বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে শসা। যদিও কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না।
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার শসা চাষিদের একজন বিল্লাল হোসেন। তিনি চলতি মৌসুমে ৩৬ শতক জমিতে শসা চাষ করেন। এতে ক্ষেত প্রস্তুত ও সারসহ খরচ পড়ে ২০ হাজার টাকা। রমজানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আট দফায় ৫০ মণ শসা বিক্রি করেছেন। শুরুতে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন।
কিন্তু আজ ১৬ এপ্রিল উপজেলার কাকনি ইউনিয়নের শসার বাজারে বেপারীর কাছে বিক্রি করেন ছয় টাকা কেজি দরে।
এ নিয়ে বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘ক্ষেতে এখনও প্রচুর শসা রয়েছে। দাম একেবারে কমে যাওয়ায় ক্ষেত থেকে শসা উঠিয়ে বাজারে নেওয়ার ইচ্ছা চলে গেছে। তবে যে পরিমাণ শসা এ পর্যন্ত বিক্রি করতে পেরেছি মোটামুটি খরচটা উঠে যাবে।’
ময়মনসিংহের বেশিরভাগ কৃষক প্রতি কেজি শসা বিক্রি করছেন ছয় টাকায়। সেই শসা বেপারীর হাত হয়ে খুচরা পর্যায়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। এভাবে দর পড়ে যাওয়ায় ক্ষেত থেকে শসা তুলে বাজারে আনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন বিল্লালের মতো কৃষকরা।
উপজেলার পাইকারি শসা বাজারের বেপারী বাবুল মিয়া জানান, ‘বাজারে বর্তমানে শসার কেজি ছয় টাকা। এই শসা ঢাকায় পাঠাতে পরিবহন ও সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে টাকা দেওয়া বাবদ খরচ হয় আরও চার টাকা। ঢাকায় পাঠাতে প্রতি কেজিতে মোট খরচ ১০ টাকা। আমরা প্রতি কেজি দেড় থেকে দুই টাকা লাভ করে ঢাকার আড়তে পাঠিয়ে দিই।’
ময়মনসিংহ কৃষি বিভাগের খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বদিউজ্জামান গণমাধ্যকে জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার হেক্টর জমিতে শসা আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে খুব ভালো। রমজানের শুরুতে বাজারদর কৃষকরা বেশ ভালো পেয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে দাম কমে গেছে। এর ফলে শসার আবাদে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।