১৮ মে, ২০২৪, শনিবার

গোপালগঞ্জে ড্রাগন ফল চাষে সফল অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক

Advertisement

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম পান্নু। ৩ বছর আগে কলেজ থেকে অবসর নিয়েছেন। অবসর নেওয়ার পর কী করবেন তাই নিয়ে পড়েন দুশ্চিন্তায়। পরে পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে ড্রাগন ফলের চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। ইউটিউব দেখে ও পরে কৃষিবিদ এসএম কামরুজ্জামানের পরামর্শে বাড়ির পাশে আড়াই বিঘা অনাবাদি জমিতে শুরু করেন ড্রাগন ফলের বাগান। আর তাতেই সফল তিনি।

জানা গেছে, মাত্র ১৬ মাসে বাগানে ড্রাগন ফল ধরতে শুরু করে। সে বছর তিনি ৩০ হাজার টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেন। চলতি বছর ১৫ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছেন। বাগানে আরও প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ড্রাগন ফল রয়েছে।

আরও জানা গেছে, আড়াই বিঘা জমিতে দুই ফিট বাই দুই ফিট ফাঁকা রেখে ৮০০ পিলারের প্রতিতে ৪-৫টি করে ৪ হাজরেরও বেশি হলুদ, লাল, সাদা, গোলাপি ও জাম রংয়ের ড্রাগন ফলের গাছ রোপণ করেন তিনি। এতে তার সব মিলে খরচ হয় ১৭ লাখ টাকা। গত বছর তিনি ৩০ হাজার টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছেন। চলতি বছরের মে থেকে ফল বিক্রি শুরু হয়। প্রতিদিন বাগান থেকে প্রায় ৩০ কেজির মতো ফল তুলছেন এবং তা প্রকারভেদে আড়াইশ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। এ বছরেই খরচ তুলে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা লাভের প্রত্যাশা করছেন তিনি।

ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, প্রোটিন, এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডিসহ নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাই কৃষি অফিসের প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে চাষিদের ড্রাগন ফল চাষাবাদের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তরা।
অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম পান্নু গণমাধ্যমকে বলেন, অবসর নেওয়ার পর সেই সময়টা কিভাবে কাটাব তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই। সে সময় পরিবারের সদস্যরা আমাকে ড্রাগন ফলের বাগান করার কথা বলে। পরে কিছুদিন ইউটিউবে এ বিষয়ে কয়েকটি কন্টেন্ট দেখি। শেষে দেশে ড্রাগন ফলের প্রচলন যিনি করেন সেই এস এম কামরুজ্জামানের সঙ্গে আমি সরাসরি যোগাযোগ করি। তারপর তিনি আমাদের এখানকার মাটি এবং অবস্থান দেখে আমাকে একটা প্ল্যান দেন। সেই অনুযায়ী আমি চাষাবাদ করছি।

তিনি আরও বলেন, এ বছর কিছুটা লাভ হয়েছে। আগামী বছর থেকে আমার সম্পূর্ণ লাভ থাকবে। এছাড়া আমার এই বাগানে কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এটাও আমার কাছে ভালো লাগে।

স্থানীয় রমজান মিয়া বলেন, ড্রাগন বাগানটি আমার চাচার। তিনি আগে শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন। অবসর নেওয়ার পর বাগানটি করেছেন। এ বছর তার কিছুটা লাভ হয়েছে। আগামী বছর সবই তার লাভ থাকবে। আমিও এই রকম একটি ড্রাগন ফলের বাগান করব। তাই তার কাছে মাঝেমধ্যে পরামর্শ নিতে আসি।

ড্রাগন ফলের বাগানে কাজ করেন কৃষক মো. রমিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি প্রথম থেকেই ড্রাগন বাগানে কাজ করি। এই টাকা দিয়েই আমার সংসার চলে। মাঝেমধ্যে বাগান থেকে ড্রাগন নিয়ে খাই। খুবই সুস্বাদু একটা ফল।

ড্রাগন বাগানে খণ্ডকালীন কাজ করা বাটিকামারী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রাজু শেখ বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি স্যারের বাগানে মাঝেমধ্যে খণ্ডকালীন কাজ করি। আর এখানে কাজ করে যে টাকা পাই, তাতে আমার হাত খরচ চলে যাই।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অরবিন্দ কুমার রায় গণমাধ্যমকে বলেন, বিনিয়োগ বেশি লাগলেও ড্রাগন ফল চাষ করা লাভজনক। কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে ড্রাগন ফলের চাষাবাদ করার আহ্বান জানান তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement