২১ মে, ২০২৪, মঙ্গলবার

চাষিরা ‘পানির দরেও’ বিক্রি করতে পারছে না তরমুজ

Advertisement

ফলন ভালো হওয়ার পরেও এ বছর ভারি বৃষ্টির কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বরিশাল অঞ্চলের তরমুজ চাষিরা। লোকসানের আশঙ্কায় চাষিরা আড়তে তরমুজ আনলেও আড়তদাররা কিনছেন না। এতে ট্রলারে করে আনা তরমুজ ট্রলারেই পচতে শুরু করেছে। বাধ্য হয়ে চাষিরা পচে যাওয়া তরমুজ খালের পানিতে ফেলে দিচ্ছেন। চাষিরা বলছেন, ‘পানির দরেও’ কেউ তরমুজ কিনছে না। এখন চালান খরচ তুলতে পারবেন কি না, তা নিয়েই সংশয় তাঁদের।

বরিশালের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল জেলায় এবার এক হাজার ৪৬ হেক্টর, বরগুনায় ১৫ হাজার ৮৩৮ হেক্টর, ভোলায় ১৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর, পিরোজপুরে ১১৬ হেক্টর, পটুয়াখালীতে ২৮ হাজার ৭৪৫ হেক্টর এবং ঝালকাঠিতে ৫৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে। বেশির ভাগ জায়গায়ই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে, কিন্তু বৃষ্টিতে তরমুজের ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিতে তরমুজ ও তরমুজের গাছ জমিতেই নষ্ট হয়েছে।

কৃষকরা জানিয়েছেন, বরিশাল বিভাগের ভোলা, বরগুনাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে চাষিরা আড়তে তরমুজ নিয়ে এসেছেন। কিন্তু কোনো আড়তদারই কাঙ্ক্ষিত দাম বলছেন না। তাই চাষিরাও তরমুজ বিক্রি করতে পারছেন না। এতে ট্রলারেই তরমুজ পচতে শুরু করেছে।

গতকাল সোমবার বরিশালের পাইকারি ফলের আড়ত পোর্ট রোডে দেখা গেছে, কীর্তনখোলা নদীর শাখা জেলখালের প্রবেশমুখে তরমুজবোঝাই শত শত ট্রলার খালাসের অপেক্ষায়। ট্রলার থেকে সময়মতো খালাস না করায় তরমুজ পচতে শুরু করেছে। চাষিদের ফেলে দেওয়া তরমুজে খালের পাড়ে স্তূপ জমেছে। আড়তের পাশে খোলা জায়গায় ফেলে দিয়েছেন অনেকে। সেগুলো গরু খাচ্ছে।

সুমন পাটোয়ারী নামের এক মাঝি জানান, তিনি সকাল ৮টায় এসেছেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও তিনি আড়তের ঘাটে পৌঁছতে পারেননি। শত শত ট্রলার আগে থেকেই তরমুজ নিয়ে ঘাটে ভিড়ে রয়েছে। এ জন্য ঘাটে ট্রলারের জট তৈরি হয়েছে।

বরগুনার বেতাগী উপজেলার তরমুজ চাষি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘নালা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম। বৃষ্টিতে ক্ষেত ডুবে যাওয়ায় কীটনাশক ও সার ছড়িয়ে পড়ে গাছ মরে যাচ্ছে। পচে যাচ্ছে তরমুজ।’

মিলন নামের এক চাষি জানান, গত বছর ভালো দাম পেলেও এ বছর তিনি খরচ তুলতে পারছেন না। কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে তিনি হতাশ। তরমুজ চাষি মাসুদ বলেন, ‘তরমুজ বিক্রি করে আগামী বছর ভালোভাবে সংসার চালানোর ইচ্ছা ছিল। তা আর হলো না।’

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement