১৯ মে, ২০২৪, রবিবার

চা রফতানিতে প্রণোদনা দেবে সরকার

Advertisement

দেশে উৎপাদিত চা রফতানির বিপরীতে প্রণোদনা দেবে সরকার। বুধবার এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সরকার রফতানি বাণিজ্য উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দেশে উৎপাদিত চা রফতানির বিপরীতে রফতানি প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সুবিধা ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জাহাজীকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

নিজস্ব বাগানে উৎপাদিত চা রফতানির ক্ষেত্রে নিট এফওবি মূল্যের ওপর ৪ শতাংশ হারে উৎপাদনকারী-রফতানিকারক প্রণোদনা প্রাপ্য হবেন।

চা রফতানির ক্ষেত্রে স্থানীয় মূল্য সংযোজনের হার ন্যূনতম ৩০ শতাংশ হতে হবে। আলোচ্য খাতে রফতানি প্রণোদনা ও ডিউটি ড্র-ব্যাক/শুল্ক বন্ড সুবিধা একসঙ্গে প্রযোজ্য হবে না।

রফতানিকৃত পণ্যের হ্যান্ডেলিং, মানোন্নয়ন, প্রক্রিয়াজাতকরণে নির্বাহকৃত ব্যয় এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিবহন এবং ফ্রেইট চার্জ পরিশোধজনিত ব্যয়ের বিপরীতে ডব্লিউটিও বিধি অনুযায়ী আলোচ্য প্রণোদনা দেওয়া  হবে। রফতানি ঋণপত্র/চুক্তিপত্রের আওতায় রফতানি পরবর্তী পর্যায়ে প্রণীত দলিলাদি কিংবা ডকুমেন্টারি কালেকশনের মাধ্যমে প্রত্যাবাসিত রফতানি আয়ের বিপরীতে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখায় রফতানিকারকরা রফতানি প্রণোদনার জন্য ফরম-ক অনুসারে আবেদনপত্র দাখিল করতে পারবেন।

টিটি’র মাধ্যমে অগ্রিম রফতানি মূল্য প্রত্যাবাসনের শর্তযুক্ত রফতানি ঋণপত্র/চুক্তির বিপরীতে রফতানির ক্ষেত্রে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখাকে বিদেশি ক্রেতার যথার্থতা/বিশ্বাসযোগ্যতা, মূল্যের সঠিকতা এবং বাংলাদেশ থেকে প্রকৃত রফতানির নিমিত্তে টিটি’র মাধ্যমে অগ্রিম মূল্য প্রত্যাবাসন সম্পর্কে টিটি বার্তার ভাষ্য ও অন্যান্য কাগজপত্রের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক উল্লেখ করেছে, টিটির মাধ্যমে অগ্রিম মূল্য পরিশোধ সরাসরি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে (এক্সচেঞ্জ হাউজ ব্যতীত) রফতানি আদেশ প্রদানকারী বা আমদানিকারক কর্তৃক সম্পন্ন হতে হবে। টিটি বার্তার ভাষ্যে আমদানি সংশ্লিষ্ট তথ্যসূত্র উল্লেখ থাকতে হবে। সব ক্ষেত্রে প্রণোদনার আবেদনপত্র বিদেশে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নস্ট্রো হিসাবে রফতানি মূল্য আকলনের (রফতানি মূল্য প্রত্যাবাসনের) তারিখের ১৮০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখায় দাখিল করতে হবে। 

রফতানির সপক্ষে প্রয়োজনীয় দলিলাদি, যেমন- জাহাজীকরণের প্রমাণস্বরূপ পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত এবং প্রত্যয়নকৃত বিল অব লেডিং/এয়ার ওয়েবিল, কমার্শিয়াল ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্ট, বিল অব এক্সপোর্ট (শুল্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত ও পরীক্ষিত হওয়ার সপক্ষে পরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রত্যয়নকৃত)-এর পূর্ণাঙ্গ সেট ইত্যাদি দাখিল করতে হবে।

রফতানি প্রণোদনার আবেদন ফরমের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে যেসব কাগজপত্র, সনদপত্র, প্রত্যয়নপত্রের উল্লেখ আছে সেগুলো সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ আকারে আবেদনের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক প্রাথমিক পরীক্ষণে নিশ্চিত হবে। প্রণোদনার আবেদনপত্রের সঙ্গে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো থেকে সংযোজিত ছক (ফরম-খ) মোতাবেক সনদপত্র দাখিল করতে হবে। রফতানির ক্ষেত্রে যেসব ডকুমেন্ট ব্যাংক শাখা কর্তৃক প্রক্রিয়াকৃত হয় সেগুলোর যথার্থতা ও সেগুলোতে উল্লিখিত তথ্যাদির শুদ্ধতার বিষয়েও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা নিশ্চিত হবে।

প্রাথমিক পরীক্ষণে পরিলক্ষিত ত্রুটির/অসম্পূর্ণতার (যদি থাকে) বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখা আবেদনপত্র প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করবে। প্রণোদনার আবেদনপত্র মোতাবেক প্রদেয় অর্থের সঠিকতার বিষয়ে নিযুক্ত বহিঃনিরীক্ষক ফার্ম দ্বারা প্রতিটি আবেদনপত্র নিরীক্ষা করাতে হবে। নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনের পর অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে রফতানি প্রণোদনা বাবদ পরিশোধ্য অর্থের দাবি প্রস্তাব বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগে ফরম-গ অনুযায়ী প্রেরণ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছাড়কৃত ভর্তুকির পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিশোধিত অর্থের বিবরণী ফরম-ঘ অনুসারে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে পরবর্তী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়ের বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগে দাখিল করতে হবে।

প্রতিক্ষেত্রে প্রণোদনা পরিশোধ অনুমোদনের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রফতানিমূল্য প্রত্যাবাসন সনদপত্র (গাইডলাইন্স ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন্স-২০১৮, ভলিউম-১-এর এপেন্ডিক্স-৫/৩৬ অনুযায়ী), জাহাজীকরণের প্রমাণস্বরূপ বিল অব লেডিং/ এয়ার ওয়েবিল, কমার্শিয়াল ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্ট ও শুল্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রত্যয়নকৃত বিল অব এক্সপোর্ট-এর ওপরে সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে প্রণোদনা পরিশোধিত মর্মে সিল এবং পরিশোধ অনুমোদনকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর সন্নিবেশ করতে হবে। যাতে ওই দলিল অপব্যবহারের সুযোগ না থাকে।

একই রফতানির আওতায় একই সুবিধার জন্য একাধিকবার পিআরসি ইস্যুকৃত না হওয়ার বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখাকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রফতানি সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও অস্পষ্টতা দেখা দিলে বা তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও অডিট ফার্ম, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, টিসিবি ভবন-১, কাওরান বাজার থেকে পরামর্শ গ্রহণ করবে।

বিধিবহির্ভূতভাবে প্রণোদনা পরিশোধ করা হলে পরিশোধকৃত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত পরিশোধকারী ব্যাংকের হিসাব বিকলনপূর্বক আদায় করা হবে। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সংঘটিত অনিয়মের সঙ্গে রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের কোনও কর্মকর্তা যুক্ত থাকলে অথবা মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনিয়মে সহযোগিতা করলে রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশন/কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া যাবে।

সরকারি বাজেট বরাদ্দের বিপরীতে ছাড়কৃত তহবিল থেকে প্রণোদনা বাবদ দাখিলকৃত আবেদনের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অনুকূলে অর্থ প্রদান করা হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement