২৬ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

জানুয়ারিতে ২টি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা : আবহাওয়া অফিস

Advertisement

রাতে বৃষ্টিপাত আর দিনে ঘন কুয়াশায় বরিশালে বাড়তে শুরু করেছে শীতের প্রকোপ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী এক মাসে শীত অনুভূতি আরও বাড়বে। চলতি মাসে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা না থাকলেও জানুয়ারি জুড়ে কমপক্ষে দুটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আসবে।

(২৮ ডিসেম্বর) বুধবার সন্ধ্যায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল বিভাগীয় আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক প্রণব কুমার রায়।

প্রণব কুমার জানান, মঙ্গলবার মাঝরাতে বরিশাল বিভাগের বিভিন্নস্থানে আকস্মিক বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিপাতের মাত্রা ছিল ১ দশমিক ২ মিলিমিটার। একই সময়ে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে শীতাকুন্ডে। এরপরে গোপালগঞ্চে ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাতের বৃষ্টির পরে দক্ষিণাঞ্চলে শীত বেড়েছে। বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ লঘুচাপের সৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টিপাত হয়।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের খুব কাছাকাছি ছিল (২৪ ডিসেম্বর)। ওই দিন ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।

চলতি মাসে কোনো শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, মৌসুমের আর একমাস শীত থাকবে। এই সময়ে বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে দুটি মাঝারি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, যেকোনো বছরের তুলনায় এবার শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে এই অঞ্চলে। অন্যান্য বছরগুলোতে শীতের মৌসুম এক মাসে ফুরালেও এবার দক্ষিণাঞ্চলে তা তিন মাসের মতো স্থায়ী হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং চলে যাওয়ার পরপরই মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে।

পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার বাসিন্দা কৃষক মনির হাওলাদার বলেন, ৬/৭ দিন ধরে দুমকিতে বেশ শীত অনুভূত হচ্ছে। অন্যান্য বছর জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে যেমন শীত লাগত এ বছর ডিসেম্বরের মাঝ সময় থেকে তেমন অনুভূত হচ্ছে। এতে নিত্যদিনের কৃষিকাজে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে।

ভোলার ভেলুমিয়া এলাকার বাসিন্দা সগির গাজী বলেন, ভোলা নদী বেষ্টিত হওয়ায় সাধারণত শীত কিছুটা কম লাগে। তবে এ বছর তার উল্টো মনে হচ্ছে। দুপুরবেলা ছাড়া অন্য সময়ে শীত লাগে। এতে বৃদ্ধ আর শিশুরা রোগাক্রান্ত হচ্ছে বেশি। তিনি জানান, তার ঘরের ৫ জন সদস্যের মধ্যে চারজনই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে একজন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলা সদরের বাসিন্দা সোহাগ বলেন, বিগত ৫ বছর ডিসেম্বরের শেষে মৃদ শীত অনুভূত হয়। কিন্তু এ বছর মনে হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের মত শৈত্যপ্রবাহে আমরাও পড়তে পারি।

হিজলা আবহাওয়া স্টেশনের ইনচার্জ আনিসুর রহমান বলেন, ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা নেমে আসলে শৈত্যপ্রবাহ ঘোষণা করা হয়। এর আগেই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অনুভূত হয়। হিজলাসহ নদী তীরবর্তী এলাকা বরিশালের মধ্য অঞ্চলের তুলনায় তাপমাত্রা বেশি রয়েছে। সাধারণত নদী তীরবর্তী এলাকা উষ্ণ থাকে।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম জানান, শীতের প্রকোপে বরিশাল বিভাগে ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত ১০ জন শিশু ও ৪ জন বয়স্ক ব্যক্তি ঠান্ডাজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement