২৬ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

তোমাদের জন্য কবিতা

Advertisement

১২৭৩ বঙ্গাব্দের (১৮৬৬) ১২ কার্তিক পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগনা জেলার ন্যাতড়ায় প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক যোগীন্দ্রনাথ সরকারের জন্ম। তাঁর আদি নিবাস ছিলো যশোরে।  

বাংলার শিশু সাহিত্যে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেন স্কুমার রায়ের সমসাময়ীক এই শিশুসাহিত্যিক।  বাংলা ভাষায় ছবির মাধ্যমে অক্ষর পরিচয় দানের উদ্দেশ্যে ছড়া ও শিশুসাহিত্য রচনার পথিকৃৎ ছিলেন যোগীন্দ্রনাথ। তিনি সখা, সখী, মুকুল, বালকবন্ধু, বালক, সন্দেশ প্রভৃতি পত্রিকায় শিশুতোষ ছড়া প্রকাশ করেন। তাছাড়া তিনি মুকুল  পত্রিকা সম্পাদনা করেন।

 শিশু মনোরঞ্জনের জন্য আজগুবি ছড়া ও প্রাসঙ্গিক ছবি তাঁর অসাধারণ সৃষ্টি। হাসিখুশি (১৮৯৭) গ্রন্থখানিই তাঁকে শিশুসাহিত্যে অমর করে রেখেছে। বিলেতি উদ্ভট ছন্দ অনুসরণে সচিত্র হাসিরাশি (১৮৯৯) ছড়াগ্রন্থটিও পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

তাই আজ দুইটি ছড়া ছোট্টবন্ধুদের উপহার দিয়ে দুই বাংলার প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিককে স্মরণ করছে ‘কানামাছি’।

মজার দেশ – যোগীন্দ্রনাথ সরকার

এক যে আছে মজার দেশ,

        সব রকমে ভালো,

               রাত্তিরেতে বেজায় রোদ,

                       দিনে চাঁদের আলো।

আকাশ সেথা সবুজবরণ

        গাছের পাতা নীল;

               ডাঙ্গায় চরে রুই কাতলা

                       জলের মাঝে চিল!

সেই দেশেতে বেড়াল পালায়,

        নেংটি-ইঁদুর দেখে;

               ছেলেরা খায় ‘ক্যাস্টর-অয়েল’-

                       রসগোল্লা রেখে!

মণ্ডা-মিঠাই তেতো সেথা,

        ওষুধ লাগে ভালো;

               অন্ধকারটা সাদা দেখায়,

                       সাদা জিনিস কালো!

ছেলেরা সব খেলা ফেলে

        বই নে বসে পড়ে;

               মুখে লাগাম দিয়ে ঘোড়া

                       লোকের পিঠে চড়ে !

ঘুড়ির হাতে বাঁশের লাটাই,

        উড়তে থাকে ছেলে;

               বড়শি দিয়ে মানুষ গাঁথে,

                       মাছেরা ছিপ ফেলে !

জিলিপি সে তেড়ে এসে,

        কামড় দিতে চায়;

               কচুরি আর রসগোল্লা

                       ছেলে ধরে খায়!

পায়ে ছাতি দিয়ে লোকে

        হাতে হেঁটে চলে!

               ডাঙ্গায় ভাসে নৌকা-জাহাজ,

                       গাড়ি ছোটে জলে!

মজার দেশের মজার কথা

        বলবো কত আর;

               চোখ খুললে যায় না দেখা

                       মুদলে পরিষ্কার।

কাজের ছেলে

যোগীন্দ্রনাথ সরকার

‘দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,

দু’টা পাকা বেল, সরিষার তেল, ডিম-ভরা কৈ।’

পথে হেঁটে চলি, মনে মনে বলি, পাছে হয় ভুল;

ভুল যদি হয়, মা তবে নিশ্চয়, ছিঁড়ে দেবে চুল।

‘দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,

দু’টা পাকা বেল, সরিষার তেল, ডিম-ভরা কৈ।’

বাহবা বাহবা- ভোলা ভুতো হাবা খেলিছে তো বেশ।

দেখিব খেলাতে, কে হারে কে জেতে, কেনা হলে শেষ।

‘দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,

ডিম ভরা বেল, দু’টা পাকা তেল, সরিষার কৈ।’

ওই তো ওখানে ঘুড়ি ধরে টানে, ঘোষেদের ননী:

আমি যদি পাই, তা হলে উড়াই আকাশে এখনি।

দাদখানি তেল, ডিম-ভরা বেল, দু’টা পাকা দৈ,

সরিষার চাল, চিনি-পাতা ডাল, মুসুরির কৈ!

এসেছি দোকানে-কিনি এই খানে, যদি কিছু পাই;

মা যাহা বলেছে, ঠিক মনে আছে, তাতে ভুল নাই!

দাদখানি বেল, মুসুরির তেল, সরিষার কৈ,

চিনি-পাতা চাল, দু’টা পাকা ডাল, ডিম-ভরা দৈ।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement