২৬ এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার

নাটোরে ৩৬ বিঘা জমির পাকা গম আগুনে পুড়ে ছাই

Advertisement

নাটোরের বড়াইগ্রামের আটঘরিয়া গ্রামের ফসলি মাঠে আগুন লেগে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ৩৬ বিঘা জমির পাকা গম। এতে ২৪ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এক কৃষকের অসর্তকতায় এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 

শুক্রবার দুপুরে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে এলাকাবাসী ও বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জানায়, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলেও প্রায় এক ঘন্টা পর ৩টার দিকে তারা বিষয়টি জানতে পারেন। ততক্ষণে আগুনে গম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

স্থানীয় চেয়ারম্যান আলী আকবর জানান, রওশন হোসেন নামের এক কৃষক শুক্রবার সকালে তার জমির পাকা গম কেটে ঘরে তোলেন। দুপুর ১২টার দিকে গমের খরের গোড়ার অংশগুলো ধ্বংস করার জন্য তিনি তার ওই জমিতে আগুন দিয়ে বাড়ি চলে যান। খরের গোড়ায় লাগানো সে আগুন পাশের পাকা গম গাছে লাগার পর তা দ্রুত অন্যান্য কৃষকের জমিতে ছড়িয়ে পড়ে।

জুম্মা নামাজ এবং রমজান মাসের প্রথম রোজার দিন হওয়ায় ওই ফসলের মাঠ এলাকায় কোন কৃষক ছিল না। ফলে নিমিষেই আগুনে সব পাকা গম পুড়ে যায়। বেলা তিনটার দিকে খবর পেয়ে বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান তিনি।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আশরাফ, সাইফুল, শামসুল, গিয়াস ও শাহজাহান জানান, পুড়ে যাওয়া ওই সব জমির এক বিঘায় কমপক্ষে ১৫ মণ গম উৎপাদন হয়। সে হিসেবে ৩৬ বিঘা জমিতে আনুমানিক ৫৪০ মণ গম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এর আনুমানিক মূল্য প্রায় ১১ লাখ টাকা। 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক চাঁদ মিয়া, সাত্তার, মজিদ, কাদের ও গাফফার বিলাপ করে বলেন, সামনে ঈদ। গম বিক্রি করে  ছেলে-মেয়েদের জন্য ঈদের জামা-কাপড় কিনতে পারতাম। কিন্তু সেটা আর হলো না। এছাড়া অনেকেই সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে গম বুনেছিলেন। সে টাকাও পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। এমন ক্ষতিতে তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। 

উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন খাতুন বলেন, রওশন হোসেন নামে এলাকার একজন সাবেক সেনা সদস্যের অসাবধানতার কারণে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে এলাবাসাসহ ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সরকারিভাবে ব্যবস্থা করা যেতো। তবুও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। 

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা করে প্রত্যেককে দ্রুত প্রণোদনা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. মারিয়াম খাতুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে কিছু একটা ব্যবস্থা করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো যেন ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হন সেজন্য তাদের তালিকা করে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement