২৭ এপ্রিল, ২০২৪, শনিবার

পাউবোর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে চলছে ধীরগতি

Advertisement

বরাদ্দের অভাবে আটকে গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প। গত দুই অর্থবছরে ২২টি উন্নয়ন প্রকল্প একনেক অনুমোদন করলেও ১৪টির কাজ এখনো শুরু করা যায়নি। আবার যেগুলো শুরু হয়েছে তার বাস্তবায়নেও চলছে ধীরগতি। এর মধ্যে ছয়টি প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ১০ শতাংশের কম। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক এক বৈঠকে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনাকালে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, একনেক সভায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৮টি এবং চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে চারটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে গত অর্থবছরের ১০টি এবং চলতি অর্থবছরের চারটি প্রকল্পের কাজ শুরুই করা যায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ১০টি প্রকল্পের দরপত্র চলমান রয়েছে। আর অর্থ বিভাগের কোড প্রাপ্তি ও প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করার পর চলতি অর্থবছরের প্রকল্পগুলোর দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু হবে।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, অর্থবরাদ্দ ও প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতি নিয়ে কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জবাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতির কারণ সম্পর্কে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জানান, প্রকল্প অনুমোদিত হলেও বাস্তবায়নকাজ শুরু করতে বরাদ্দের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আর একটি প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ার পর ঠিকাদার নিয়োগ পর্যন্ত যথেষ্ট সময় লাগে। জমি অধিগ্রহণের বিষয় থাকলে জটিলতা আরো বাড়ে।

প্রয়োজনীয় বরাদ্দ সংকটের কথা জানান পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। তিনি বলেন, বরাদ্দ সীমাবদ্ধতার কারণে ঠিকাদারদের বিল সময়মতো দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে প্রকল্পের কাজ শেষ হতে বিলম্ব হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে শাস্তি দেওয়ার পরও ঠিকাদাররা সময়মতো কাজ শেষ করেন না।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রমেশ চন্দ্র সেন গণমাধ্যমকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। ফলে প্রকল্প বরাদ্দও কমেছে। এসব কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি কমেছে।

চলতি অর্থবছর অনুমোদন পেলেও কাজ শুরু হয়নি এমন প্রকল্পগুলো হচ্ছে—৫৮৬ কোটি টাকার ‘খাগড়াছড়ি শহর ও তত্সংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন হতে সংরক্ষণ’ প্রকল্প, ৫৫২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ‘শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার নদীতীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প, ১৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার ‘চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার শ্রীমাই খালে মাল্টিপারপাস হাইড্রলিক ইলিভেটর ড্যাম’ প্রকল্প এবং ৬৭৬ কোটি টাকার ‘বরিশাল জেলার বিঘাই ও পায়রা নদীর ভাঙন হতে শেখ হাসিনা সেনানিবাস এলাকা রক্ষা’ প্রকল্প।

কাজ শুরুর অপেক্ষায় থাকা গত অর্থবছরের প্রকল্পগুলোর মধ্যে আছে—এক হাজার ১৮২ কোটি টাকার ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার অ্যন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’, ৭৫১ কোটি টাকার ‘বরগুনা জেলাধীন পোল্ডার ৪১/১ ও ৪৪বি পুনর্বাসন ঝুঁকিপূর্ণ অংশ নদীর ভাঙন হতে প্রতিরক্ষা’ প্রকল্প, ৮২৬ কোটি টাকার ‘বরগুনা জেলাধীন পোল্ডার ৪১/৬এ ও ৪১/৬বি ও ৪১/৭এ পুনর্বাসন, বেতাগী শহরসহ অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ অংশ এবং বিষখালী ও পায়রা নদীর ভাঙন হতে প্রতিরক্ষা’ প্রকল্প, এক হাজার ৯২ কোটি টাকার ‘ভোলা জেলার মুজিবনগর ও মনপুরায় উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন, নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প।

Advertisement

আরও পড়ুন

Advertisementspot_img
Advertisement

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

Advertisement