জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। তরুণ বয়সে ফুটবল পায়ে মাঠ মাতিয়েছেন ঢাকাই লিগে, দীর্ঘদিন খেলেছেন ঢাকা ওয়ান্ডারার্স স্পোর্টিং ক্লাবে। বঙ্গবন্ধুর দুই সন্তান শেখ কামাল ও শেখ জামালও ছিলেন সফল ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক। বর্তমান ঢাকা আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন শেখ কামাল। কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল খুকুও ছিলেন দেশের খ্যাতনামা অ্যাথলেট। এমন ক্রীড়া প্রেমী পরিবারে জন্ম নেওয়া বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্রীড়াপ্রেম থাকবে সেটাই স্বাভাবিক ঘটনা। বাবা ও ভাইদের দেখানো পথেই বাংলাদেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে একের পর এক অবদান রেখেছেন প্রাধানমন্ত্রী, এখনও সেই ধার বজায় রেখেই দেশের ক্রীড়া এগিয়ে নিতে সামনে থেকে নেত্রীত্ব দিয়ে যাচ্ছেন হাসিনা।
একটু পেছনে ফিরে তাকালে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু পরিবারের ক্রীড়া প্রেম। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাইয়ে বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের সাথে বিয়ে হয় সেসময়ে দেশ সেরা অ্যাথলেট সুলতানা কামাল খুকুর। বিয়ের আগেই বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা পরিবারের সদস্যদের বলে দিয়েছিলেন তার পুত্র বধুকে যেন তার ক্রীড়া ক্ষেত্রে সকলে সহযোগিতা করে। সেই সাথে খেলাধুলার ব্যাপারে তাকে যেন সবসময়ই সহযোগিতা করা হয়। মায়ের সেই কথা অক্ষরে অক্ষরে যেমন পালন করেছেন শেখ কামাল, ঠিক তেমনি পালন করেছেন শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, ও শেখ জামালও। সেই সুত্রেই বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ সন্তানের খেলাধুলায় উৎসাহ প্রদানের নজির মেলে বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই যেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনে লাগে নতুন হওয়া, ৯৭ সালে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। আকরাম-নান্নুরা আইসিসি ট্রফির সেমিফাইনালে স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনের সাথে সাথেই বাংলার মাতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা দেন বাংলাদেশের ক্রিকেট দলকে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে গণসংবর্ধনার দেওয়ার। সেই অনুপ্রেরনাতেই হয়তো ফাইনাল ম্যাচে ১ বলে এক রানের নতুন ইতিহাস গড়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো শান্ত-পাইলটরা। আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশ শিরোপা জিতে সেই গণসংবর্ধনাকে পরিণত করে জাতীয় উৎসবে। দিনটি পহেলা বৈশাখ হওয়ায় আনন্দে ভাসে পুরো জাতি।
১৯৯৭ সালের ১৪ এপ্রিল সকাল ৭টায় দেশেফিরবে বলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে বিমানবন্দরে গিয়ে বরণ করে নিয়েছিলো তাদের। আর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে একই দিন গণসংবর্ধনা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ঘোষনা দিয়ে বলেছিলের, বাংলাদেশ ক্রীড়া জগতে বিশ্বের বুকে সম্মান ফিরিয়ে এনেছে। একইসঙ্গে তিনি টাইগারদের তৎকালীন কোচ এবং সাবেক ক্যারিবীয়ান ক্রিকেট গ্রেট গর্ডন গ্রিনিজকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদানের কথাও দেশবাসীকে জানান। আইসিসি ট্রফি জয়ী প্রতিটি খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের উপহার একখন্ড করে জমি।
যতই ব্যস্ত থাকুন বাংলাদেশের খেলা মানেই ভিভিআইপি গ্যালারির পরিচিত মুখ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাতে থাকে দেশের পতাকা। লাল সবুজের সেই পতাকা নাড়িয়ে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতে দেখা যায় শেখ হাসিনাকে। দেশের সাফল্যে মাঠে গিয়েও অভিনন্দন জানান খেলোয়াড়দের। অনেক সময় পরিবারের অন্য সদস্যরা তার সঙ্গী হন খেলার মাঠে।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ভালো কিছুর মুখ দেখেনি বাংলাদেশ কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৯ দল ঠিকই বিশ্বের বুক থেকে ছিনিয়ে এনেছে বিশ্বকাপ ট্রফি। তাদেরকেও অনুপ্রেরনা জুগিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আকবররা যখন সেমিফাইনালে দক্ষিন আফ্রিকাকে সেমিফাইনালে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিলো তখনই প্রধানমন্ত্রী তাদের ফোন করে অভিনন্দন জুগিয়েছিলেন, সাহজ দিয়েছিলেন সেমিফাইনাল-ফাইনালে জিতে বিশ্বকাপ ট্রফিটে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে।
বিশ্বকাপ জয়ের পর ক্রিকেটাররাও বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরনাতেই বিশ্ব জয় করতে পেরেছে তারা। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে ভারত বধ করে জুনিয়র টাইগারদের বিশ্ব বিজয় বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসের সেরা অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ এনে দেয়ায় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল, কোচ, ম্যানেজার এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছিলেন, মুজিববর্ষের প্রাক্কালে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে জয়লাভ করায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল, কোচ, ম্যানেজার এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। এই খেলোয়াড়ি মনোভাব ধরে রেখে এভাবেই ভবিষ্যতে আমাদের এগি…
আরও পড়ুনঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন